২০২৫ সালের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অন্তত ৫টি ইউনিকর্ন গড়ে উঠবে: পলক
ক.বি.ডেস্ক: গ্লোবাল ম্যানেজমেন্ট কনসাল্টিং ফার্ম বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ সম্প্রতি বাংলাদেশের অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিপর্যয় সত্ত্বেও কীভাবে দেশটির অর্থনীতি সামনে এগিয়ে যাচ্ছে এর ওপর আলোকপাত করে একটি সমীক্ষা পরিচালনা করেছে। ব্যবসায়িক কমিউনিটি, উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির দ্রুত সম্প্রসারণে প্রবৃদ্ধিশীল ভোক্তা বাজার, সাড়ে ৬ লাখেরও বেশি ফ্রিল্যান্সার নিয়ে ক্রমবর্ধমান গিগ ইকোনোমি, সঙ্গে ডিজিটাল রূপান্তর এবং সরকারের বহুমুখী প্রচেষ্টা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরাণ্বিত করে চলেছে। ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দেশে পরিণত হতে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে প্রবৃদ্ধিশীল বেসরকারি খাত।
আজ শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকার একটি স্থানীয় হোটেলে ‘‘দ্যা ট্রিলিয়ন-ডলার প্রাইজ-লোকাল চ্যাম্পিয়ন্স লিডিং দ্যা ওয়ে’’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। মূল বক্তা ছিলেন এইচএসবিসি বাংলাদেশের কর্পোরেট কমার্শিয়াল ব্যাংকিংয়ের কান্ট্রি হেড রিয়াজ এ চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপের গ্লোবাল চেয়ার ইমেরিটাস হ্যান্স-পল বার্কনার, সিনিয়র পার্টনার জারিফ মুনির, পার্টনার শৈবাল চক্রবর্তী এবং পার্টনার তৌসিফ ইশতিয়াক।
‘দ্যা ট্রিলিয়ন-ডলার প্রাইজ-লোকাল চ্যাম্পিয়ন্স লিডিং দ্যা ওয়ে সমীক্ষা’ প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়- ভিয়েতনাম, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের মতো দেশকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এ প্রবৃদ্ধিকে ত্বরাণ্বিত করতে অপ্টিমিস্টিক আউটলুক, গিগ ইকোনমি, ভোগ্য পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি, তরুণ ও ক্রমবর্ধমান কর্মশক্তি, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, ডিজিটাল মাধ্যমের বহুল ব্যবহার, সরকারি উদ্যোগ এবং একটি বৃহত, সু-সংগঠিত বেসরকারি খাতসহ বিভিন্ন বিষয় সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। সমীক্ষায় চ্যাম্পিয়নদের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের করণীয় সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা হয়েছে। যেন জাতীয় প্রোগ্রাম ও ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে তারা পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমরা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপে বিশ্বাসী। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জনকে লক্ষ্য রেখে এগিয়ে যাচ্ছি। ২০২৫ সালের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অন্তত ৫টি ইউনিকর্ন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে গড়ে উঠবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ অনেক আগেই ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন দেখেছে। এ বিষয়টি এখন বাস্তবে পরিণত হয়েছে। এখন আমরা বিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম।
ড. হ্যান্স-পল বার্কনার বলেন, বাংলাদেশ এখন অন্যান্য উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য রোল মডেল। এ দেশটি ইতোমধ্যে অনেক কিছু অর্জন করেছে। দেশের বেসরকারি খাতের অপরিসীম অবদানের কারণে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর রূপান্তর এবং দেশের বেসরকারি খাতের উল্লেখযোগ্য অবদান এ গতিকে ত্বরাণ্বিত করেছে। লক্ষ্য অর্জন করতে এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত রাখতে স্থানীয় বেসরকারি খাতের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে রূপরেখা আমাদের সমীক্ষায় প্রকাশ করা হয়েছে।
জারিফ মুনির বলেন, ৫ থেকে ৭ বছর আগে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি দেশের প্রবৃদ্ধির পেছনে মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। অন্যদিকে বেসরকারি খাত থেকে উদীয়মান চ্যাম্পিয়নরা তৈরি হয়েছে, যাদের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবে, পরিণত হবে ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনোমিতে। আমাদের উদীয়মান চ্যাম্পিয়নদের বৈশ্বিকভাবেও বিস্তৃতির লক্ষ্য রয়েছে এবং এক্ষেত্রে তাদের এগিয়ে যাওয়ার মূলমন্ত্র হবে- সবসময় রূপান্তরে প্রাধান্য দেয়া, সামাজিক প্রভাবসহ আরও অনেক বিষয়।