২০২০: বছরজুড়ে আইসিটিনির্ভর নাগরিক সেবায় এটুআই
রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার দেশব্যাপী বিভিন্ন ডিজিটাল কার্যক্রমের উদ্যোগ গ্রহণ করছে। এ লক্ষ্যে আইসিটি বিভাগ ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বাস্তবায়নাধীন এবং ইউএনডিপির সহায়তায় পরিচালিত এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রোগ্রাম আইসিটিনির্ভর নাগরিক সেবা সহজিকরণে নানা উদ্ভাবনী উদ্যোগে সহযোগিতা প্রদান করে আসছে। ২০২০ সালে এটুআইর বিভিন্ন উদ্ভাবনী উদ্যোগ নিয়ে প্রতিবেদনটি লিখেছেন- আদনান ফয়সল (পর্ব-২)
- জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অর্জিত পুরস্কারসমূহ
০১. টানা ৭ম বারের মত আইসিটিখাতে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) পুরস্কার-২০২০ অর্জন করেছে এটুআই’র দুটি উদ্যোগ। ই-বিজনেস ক্যাটাগরিতে ‘একশপ’ (ekshop.gov.bd) এবং ই-এমপ্লয়মেন্ট ক্যাটাগরিতে দক্ষতা, কর্মসংস্থান ও এন্টারপ্রেনারশিপ বিষয়ক সমন্বিত ইন্টিলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম’ (skills.gov.bd) চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার অর্জন করেছে। প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত পর্বের জন্য এটুআই’র ৪টি উদ্ভাবনী উদ্যোগ ডিজিটাল সার্ভিস ডিজাইন ল্যাব, একশপ, ন্যাশনাল স্কিলস পোর্টাল এবং কিশোর বাতায়ন মনোনীত হয়। আইসিটির মাধ্যমে মৌলিক ও জনকল্যাণমূলক প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং এ সম্পর্কিত সেবা দানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতিবছর জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্যা ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) প্রাইজ নামে এই পুরস্কার প্রদান করে থাকে।
০২. দেশব্যাপী ই-মিউটেশন উদ্যোগ বাস্তবায়নের স্বীকৃতি হিসেবে ভূমি মন্ত্রণালয় স্বচ্ছ ও জবাবদিহি সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিকাশ ক্যাটাগরিতে ইউনাইটেড নেশনস পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড ২০২০ অর্জন করেছে। ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে তিনটি পার্বত্য জেলা বাদে সারাদেশে একযোগে শতভাগ ই-নামজারি বাস্তবায়ন শুরু হয়। এটুআইর কারিগরি সহযোগিতায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনায় ও ভূমি সংস্কার বোর্ডর সহায়তায় ই-মিউটেশন বা ই-নামজারি প্রকল্পটি সারাদেশে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
০৩. বিভিন্ন দেশের আইসিটিখাতের সংগঠনগুলোর জোট ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস এলায়েন্স (উইটসা) কর্তৃক ভার্চুয়ালগ্লোবাল আইসিটি অ্যাক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২০ অর্জন করেছে সিনেসিস আইটি এবং এটুআই প্রকল্প। কোভিড-১৯ সংকট মোকাবেলায় প্রযুক্তিগত সেবা কোভিড-১৯ টেলিহেলথ সার্ভিসের সাহায্যে নাগরিকদের চিকিতসা সহায়তা প্রদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এটুআই এই গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। গত ১৮ নভেম্বর, ২০২০ সালে রোড টু ডব্লিউসিআইটি মালয়েশিয়া থেকে ডব্লিউআইটিএসএ তথ্য প্রযুক্তির নোবেল খ্যাত ভার্চুয়াল গ্লোবাল আইসিটি অ্যাক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা কার্যক্রম শুরু করে এবং ১৯ নভেম্বর ২০২০ এ স্বীকৃতি প্রদান করে।
- ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে এবং নাগরিক সেবা সহজিকরণে কার্যক্রমসমূহ
১. গত ০৮ জানুয়ারি ২০২০ `ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস’ ২০১৯ এর সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার সরকার (মাই গভ) অ্যাপ-এর উদ্বোধন করেন। সরকারি সকল পরিষেবা একটি মোবাইল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রদানের লক্ষ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশের অবদান, এক ঠিকানায় সব সমাধান স্লোগান নিয়ে আইসিটি বিভাগের তত্ত্বাবধানে এটুআই’র আমার সরকার/ মাইগভ অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছে। এই অ্যাপে অনলাইনে এখন সরকারের ৬০০ এর অধিক সেবা পাওয়া যাচ্ছে এবং আরও সরকারি ও বেসরকারি সেবা অ্যাপটিতে যুক্ত করা হবে। এই অ্যাপটি যন্ত্রের সঙ্গে কথোপকথন প্রযুক্তি সংযোজিত হওয়ায় বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি এবং সাধারণ নাগরিকগণ প্রযুক্তি জ্ঞান ছাড়াও সহজে ব্যবহার করতে পারবেন। কেউ বিপদে পড়লে অ্যাপটি খুলে মোবাইল ফোন ঝাঁকালে সরাসরি জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন চলে যাবে। এই অ্যাপটি একসেবা, জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩, একপেসহ সরকারের বিভিন্ন জনবান্ধব উদ্যোগ এবং জাতীয় পরিচয়পত্র অ্যাপটির সঙ্গে সংযুক্ত থাকায় এটি সকলের জন্য একটি সমন্বিত সেবা কাঠামো তৈরির রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টাকে আরও ত্বরান্বিত করবে।
২. মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এবং এটুআইর সহযোগিতায় গত ০৯ জানুয়ারি ২০২০ মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে আয়োজিত হয়েছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘ডিজিটাল সার্ভিস বাস্তবায়ন পরিকল্পনা সমন্বয়করণ ও ডিজাইন ল্যাবে’র সমাপনী অনুষ্ঠান। অনু্ষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক। ডিজিটাল সার্ভিস ডিজাইন ল্যাবে মোট ৩৬টি সেবার ক্ষেত্রে (০৬টি জিটুবি ও ৩০টি জিটুসি) ০৭টি গ্রুপের পর্যালোচনায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি ইন্টিগ্রেটেড ডিজিটাল সার্ভিস ডেলিভারি প্ল্যাটফর্মের বিষয় উঠে আসে। যার মধ্যে ডে কেয়ার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ডিজিটাল মিউজিয়াম অ্যান্ড ভার্চুয়াল আর্ট গ্যালারি সিস্টেম, ই-কমার্স অ্যান্ড সেলস্ সেন্টার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, মনিটরিং অ্যান্ড রিপোর্টিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ই-লাইব্রেরি অ্যান্ড পাবলিকেশনস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ডিজিটাল নারীসহ মোট ১১টি সিস্টেম উল্লেখযোগ্য।
৩. রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে গত ২২ জানুয়ারি ২০২০ বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) আয়োজনে এবং এটুআইর ডিজিটাল সার্ভিস এক্সিলারেটরের সহযোগিতায় আয়োজিত ‘ডিজিটাল সার্ভিস ডিজাইন অ্যান্ড প্ল্যানিং ল্যাব’ (ডিএসডিএল)- এর সমাপনী পর্বে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের আচার্য হিসেবে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ডিজিটাল সার্ভিস ডিজাইন অ্যান্ড প্ল্যানিং ল্যাবে মোট ৩৩টি সেবার ক্ষেত্রে (০৩টি জিটুবি ও ৩০টি জিটুসি) ১৩টি গ্রুপের ৯টি সিস্টেম পর্যালোচনায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের জন্য একটি ইউনিফর্মড ইউনিভার্সিটি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার এবং ইন্টিগ্রেটেড ডিজিটাল সার্ভিস ডেলিভারি প্ল্যাটফর্মের বিষয় উঠে আসে। যার মধ্যে ভর্তি ও রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থাপনা সিস্টেম, হল/হোস্টেল/ডর্ম/ক্যাফেটেরিয়া/গেস্ট হাউজ ব্যবস্থাপনা সিস্টেম, একাডেমিক কার্যক্রম ফেকাল্টি ব্যবস্থাপনা সিস্টেম, পরীক্ষা ও ফলাফল ব্যবস্থাপনা সিস্টেম, প্রকাশনা, জার্নাল ও গবেষণা ব্যবস্থাপনা সিস্টেম, শৃঙ্খলা/অভিযোগ ব্যবস্থাপনা সিস্টেম, ইভেন্ট ও নোটিশ ব্যবস্থাপনা সিস্টেম, সার্টিফিকেট ও ডকুমেন্ট ব্যবস্থাপনা সিস্টেম’সহ (ব্লকচেইনভিত্তিক) মোট ০৯টি সিস্টেম উল্লেখযোগ্য।
৪. নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এবং এটুআইর ডিজিটাল এক্সিলারেটরের সহযোগিতায় গত ২৯ জানুয়ারি ২০২০ পূর্ত ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত হয় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল সার্ভিস ডিজাইন ল্যাবের সমাপনী অনুষ্ঠান। অনু্ষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক। ডিজিটাল সার্ভিস ডিজাইন ল্যাবে মোট ৭২টি সেবার ৩৭টি সিস্টেমের ক্ষেত্রে (২০টি জিটুবি, ০৬টি জিটুসি এবং ১১টি জিটুজি) ০৫টি গ্রুপের পর্যালোচনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের একটি ইন্টিগ্রেটেড ডিজিটাল সার্ভিস ডেলিভারি প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগ নেয়। যেখানে ৫টি সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইন্টিগ্রেটেড সেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন, সার্টিফিকেট, পার্মিশন ও এনওসি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, মেরিন এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, লীজ ও রেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, শেয়ারহোল্ডারস ও লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং শীপ ও কার্গো ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম।
৫. এটুআই এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) যৌথ আয়োজনে গত ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিবিএস কনফারেন্স কক্ষে এসডিজি ট্র্যাকার এবং এসডিজি লোকালাইজেশন বিষয়ক কনসাল্টেশন শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জন ও এসডিজি তথ্য ও উপাত্তের স্থানীয়করণে ৩৯+১ অগ্রাধিকার সূচক পর্যবেক্ষেণ ও মূল্যায়নের রূপরেখা নির্ধারণের লক্ষ্যে এ কর্মশালাটি আয়োজিত হয়। এসডিজি ট্র্যাকারে নিয়মিত ডেটা প্রদান চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়, +১ জেলা ও উপজেলা ভিত্তিক অগ্রাধিকার সূচকের পর্যালোচনা, এসডিজি ট্র্যাকারের ব্যবহার ও ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে মতামত ও পরামর্শ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন।
৬. এটুআই ইনোভেশন ল্যাবের তত্ত্বাবধানে উদ্ভাবিত পাওয়ার টিলার গত ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ নওগাঁ জেলার ১১টি উপজেলার ১১জন বেকার যুবকদের নিকট খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার হস্তান্তর করেন। এটুআই ইনোভেশন ল্যাব কর্তৃক উদ্ভাবিত এই স্বল্পমূল্যের পাওয়ার টিলার সম্পূর্ণ স্থানীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। উদ্ভাবিত পাওয়ার টিলার যা প্রচলিত অন্য যেকোন পাওয়ার টিলারের সমতুল্য। এই পাওয়ার টিলারের বাজারমূল্য ৮০ হাজার টাকা। স্বল্পমূল্যের এই পাওয়ার টিলার এটুআই ইনোভেশন ফান্ড এর ৮ম রাউন্ডে পুরস্কার প্রাপ্ত হয়।
৭. সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে ১০ লাখ স্কুল শিশু নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার সংক্রান্ত সনদ পাওয়ার লক্ষ্যে গত ১১ ফেব্রুয়ারি নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস রাজধানীর আইসিটি টাওয়ারে আয়োজিত হয় আলোচনা সভা এবং অনলাইন সেফটি ফর চিলড্রেন সার্টিফিকেশন কোর্সের উদ্বোধন। শিশুরা এই সনদ লাভের মাধ্যমে কেবল তাদের অনলাইন অভিজ্ঞতাকেই নিরাপদ হবে না, একইসঙ্গে দেশকেও নিয়ে যাবে একটি অনন্য বিশ্ব রেকর্ডের দ্বারপ্রান্তে। ক্রমবর্ধমান নেট-সংযুক্ত বিশ্বে এদেশের শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা অনলাইনে যেসব ঝুঁকি ও বিপদের মুখোমুখি হয় তা কমিয়ে আনতে ইউনিসেফের সহায়তায় সরকারের আইসিটি বিভাগ এই কার্যক্রম শুরু করে।
৮. এটুআইর আয়োজনে গত ০৩ মার্চ ২০২০ জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের আইল্যাব অডিটরিয়ামে ভবিষ্যত কর্মের জন্য সমন্বিত জাতীয় কাঠামো তৈরির পরিকল্পনা প্রণয়ন কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠান এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। আলোচকগণ ভবিষ্যত কর্মদক্ষতা প্রস্তুতকরণে ৫টি বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করেন। ১. শিক্ষা কার্যক্রম, জব ও স্কিলসের রিয়েল টাইম ডাটা; ২. জব ও স্কিলসের ভবিষ্যত সম্ভাবনা; ৩. নানা সুযোগ-সুবিধা; ৪. শিক্ষা কার্যক্রম ও জব মার্কেটের সমন্বয় এবং ৫. সমসাময়িক পলিসি তৈরির মাধ্যমে একটি সমন্বিত উদ্যোগের পরামর্শ প্রদান করেন আলোচকবৃন্দ।
৯. যাকাত কিংবা আর্থিক অনুদান যেকোন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সহজে প্রদানের লক্ষ্যে গত ১৫মে ২০২০ চালু হয় দেশের প্রথম ক্রাউন্ডফান্ডিং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম `একদেশ’। এটুআই ক্রাউডফান্ডিং মডেলের এই একদেশ নামক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্থ দরিদ্র মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহকে আর্থিক সহায়তার জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর একদেশ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সারাদেশের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ যাকাত কিংবা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আর্থিক অনুদান প্রদান করতে সক্ষম। আর্থিক অনুদান একদেশ ওয়েবসাইটে https://ekdesh.ekpay.gov.bd/ প্রবেশ করে অথবা একদেশ অ্যাপের মাধ্যমেও প্রদান করা যায়।
১০. দেশের খাদ্যশস্য ও কৃষিপণ্যের সঠিক বিপণন, ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ, চাহিদা মোতাবেক সহজলভ্যতা তৈরি এবং জরুরি অবস্থায় ফুড সাপ্লাইচেইন অব্যাহত রাখতে গত ২৩ মে ২০২০ বাংলাদেশের প্রথম উন্মুক্ত কৃষি মার্কেটপ্লেস `ফুড ফর ন্যাশন’ (foodfornation.gov.bd) চালু করা হয়। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনলাইনে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রী ড. মো.আব্দুর রাজ্জাক প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন করেন। ফুড ফর ন্যাশন বাংলাদেশের প্রথম উম্মুক্ত কৃষিপণ্য প্ল্যাটফর্ম। সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা একশপ এর নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সরাসরি কৃষক থেকে শুরু করে বাজারজাতকারী, আড়তদার, বিপণনকারী এবং প্রাতিষ্ঠানিক ভোক্তা একই প্ল্যাটফর্মে পাচ্ছেন দেশব্যাপী দাম আর মানের যাচাই আর সরাসরি বাণিজ্যিক যোগাযোগের সুযোগ। সহজ ও মোবাইল বান্ধব ইন্টারফেসের এ প্লাটফর্মে ক্রেতা-বিক্রেতা রেজিস্ট্রেশন করে কৃষি জাতীয় সকল ভোগ্য ফসল বা সবজির ক্যাটাগরি নির্বাচন করে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন এবং কিনতে পারেন। স্টার্টআপ বাংলাদেশের মাধ্যমে এখানে যুক্ত সব ধরনের ক্রেতারা বিক্রেতার প্রোফাইলে দেয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে শাকসবজিসহ সব কৃষিপণ্য ক্রয় বা তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। পণ্য ক্রয় করে মূল্য পরিশোধে ক্রেতা এবং বিক্রেতা তাদের সুবিধামতো মাধ্যম নির্বাচন করে লেনদেন করবেন। পরিবহণের ক্ষেত্রে ক্রেতা-বিক্রেতা নিজে দরদাম করে ব্যবস্থা করতে পারে অথবা একশপ ফুলফিলমেন্ট সেবাটি গ্রহণ করতে পারেন।