১১-১৪ নভেম্বর ‘ডব্লিউসিআইটি ২০২১’
ক.বি.ডেস্ক: ‘আইসিটি দ্য গ্রেট ইকুলাইজার’ স্লোগানে আগামী ১১ থেকে ১৪ নভেম্বর চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির বিশ্ব সম্মেলন ‘‘ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজি ২০২১’’ (ডব্লিউসিআইটি ২০২১) এর ২৫তম আসর। দ্য ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্স (উইটসা) এর উদ্যোগে এই সম্মেলনে দেশের আয়োজক বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এবং বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি (বিসিএস)।
সম্মেলনটি সরাসরি ও অনলাইন উভয় প্ল্যাটফর্মে আয়োজন করা হচ্ছে। ফি পরিশোধ করে সরাসরি এবং বিনা মূল্যে অনলাইনে সেমিনারগুলোতে অংশগ্রহণ করা যাবে। সম্মেলন উপভোগ করার জন্য অ্যাপ উন্মুক্ত করা হয়েছে। গুগল প্লে স্টোর ও আই স্টোর থেকে wcit2021 নামের অ্যাপটি বিনা মূল্যে ডাউনলোড করে ইন্সটল করা যাবে। তবে ব্যবহারের পূর্বে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। এ ছাড়াও www.wcit2021.com.bd এ ভিজিট করে অনলাইনে সম্মেলন ও প্রদর্শনী ঘুরে আসা যাবে। সরাসরি এবং অনলাইন রেজিস্ট্রেশনসহ ডব্লিউসিআইটি সম্মেলনের যাবতীয় তথ্য www.wcit2021.org.bd পাওয়া যাবে।
তথ্যপ্রযুক্তির অলিম্পিক হিসেবে খ্যাত এ আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘‘ডব্লিউসিআইটি ২০২১’’ উপলক্ষে এবং বিস্তারিত তথ্য জানানোর জন্য আজ মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) ঢাকার একটি স্থানীয় হোটেলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে ডব্লিউসিআইটি ২০২১ এর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন প্রধান অতিথি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বিসিসি’র নির্বাহী পরিচালক ড. মো. আব্দুল মান্নান, বিসিএস সভাপতি শাহিদ-উল-মুনীর। অনলাইনে যুক্ত ছিলেন উইটসা’র সেক্রেটারি জেনারেল জেমস এইচ পয়সান্ট। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিসিএস’র সহসভাপতি জাবেদুর রহমান শাহীন, মহাসচিব মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব মুজাহিদ আল বেরুনী সুজন, কোষাধ্যক্ষ কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, পরিচালক রাশেদ আলী ভূঁইয়াসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ১১ থেকে ১৪ নভেম্বর চার দিনব্যাপী ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তথ্যপ্রযুক্তির অলিম্পিক হিসেবে খ্যাত এ আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে অনলাইনেও সম্মেলনে যুক্ত হওয়া যাবে। ডব্লিউসিআইটি ২০২১ সম্মেলনের একই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়া এবং ওশেনিয়া অঞ্চলের আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘অ্যাসোসিও ডিজিটাল সামিট ২০২১’। সম্মেলনে থাকছে মোট ৩০টি সেমিনার, মিনিস্টারিয়াল কনফারেন্স, বিটুবি সেশন। অনলাইনে নিবন্ধিত হয়ে এই সেমিনারগুলোতে অংশ নেয়া যাবে।
ডব্লিউসিআইটি ২০২১ উতসবে প্রতিদিন সেমিনারের পাশাপাশি থাকছে বিশেষ আয়োজন। এ বিশেষ আয়াজনের ১১ নভেম্বর থাকবে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ নাইট’। এতে বাংলাদেশের বিগত ১২ বছরের তথ্যপ্রযুক্তিতে অগ্রগতির সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে। অনুষ্ঠিত হবে ‘মিনিস্টারিয়াল কনফারেন্স’। এতে অনলাইনে যুক্ত হবেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
১২ নভেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’র জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে স্বাধীন সর্বোভৌম রাষ্ট্র ও তথ্য প্রযুক্তিতে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর গৃহিত উদ্যেগসমূহ উপস্থাপন করা হবে। এ দিন ‘অ্যাসোসিও অ্যাওয়ার্ড নাইট’ অনুষ্ঠানে এশিয়া-ওশেনিয়া অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।
১৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অগ্রগতি, অর্জন-গৌরবের বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে। একই দিনে ‘উইটসা আইসিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড নাইট’ অনুষ্ঠানে সারা বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেয়া হবে।
১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনে তথ্যপ্রযুক্তির বিশ্ব সম্মেলন ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজির (ডব্লিউসিআইটি ২০২১) ২৫তম আসর এর রজত জয়ন্তী উদযাপিত হবে।
চার দিনব্যাপী (১১-১৪ নভেম্বর) অনুষ্ঠিতব্য এ বিশ্ব সম্মেলনের বিভিন্ন সেমিনারে অংশগ্রহণ করবেন সারাবিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ। আধুনিক ইন্টারনেটের অন্যতম জনক ভিন্টনগ্ৰেসার্ফ ও রবার্ট কান, আধুনিক ইন্টারনেটের জননী ড. রাদিয়া পারম্যান ও ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের উদ্ভাবক স্যার টিমোথি বারনার্স লি, ইন্টেল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ওমর এস ইশরাক ও নাসার সদর দপ্তরের (এজেন্সি বাজেট, স্ট্র্যাটেজি ও পারফর্মেন্স) ডেপুটি সিএফও ডাউগ কমস্টক সেমিনারে অনলাইনে উপস্থিত থাকবেন।
‘অন্যভাবে সক্ষম’ ব্যক্তিদের জন্য নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের কমিশনার ভিক্টর ক্যালিস ভবিষ্যতে স্মার্ট সিটি বিষয়ে বক্তব্য রাখবেন। ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) এর চিফ স্টাডি গ্রুপস ডিপার্টমেন্টের বিলেল জামৌসি বক্তৃতা করবেন। আইএমডি স্মার্ট সিটি অবজারভেটরির সভাপতি ড. ব্রুনোল্যানভিন একটি সেমিনারে অংশ নেবেন। এ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনলাইনে বিভিন্ন বক্তা একাধিক সেমিনারে সংযুক্ত হবেন।
প্রযুক্তিগতভাবে দেশের সক্ষমতা বেড়েছে। ফলে এই ধরনের তথ্যপ্রযুক্তির আন্তর্জাতিক সম্মেলন বাংলাদেশ করতে যাচ্ছে। দেশে এই আয়োজন প্রমাণ করে ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন স্বপ্ন নয়, এটি এখন বাস্তব। বাংলাদেশ আইসিটিকে হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করে শ্রম নির্ভর অর্থনীতি থেকে প্রযুক্তি নির্ভর অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এবারের আয়োজনে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বচ্ছ ধারণা দেবে। পাশাপাশি এতে অংশ নিয়ে বিশ্ব প্রযুক্তির সর্বশেষ খবর জানা যাবে। বিগত প্রায় ১২ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের যে অর্জন তা এই সম্মেলনের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে ব্র্যান্ডিং করার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। সরকার আশা করছে এই সম্মেলনের মাধ্যমে এখাতে বাংলাদেশ অনেক ধরনের জ্ঞান অর্জন করতে পারবে।
ডব্লিউসিআইটি ২০২১ এর অংশীদার বেসিস, বাক্কো, আইএসপিএবি এবং ই-ক্যাব।