স্মার্ট বাংলাদেশ বিণির্মানে একসঙ্গে ইউএনডিপি, বিডা ও গ্রামীণফোন
ক.বি.ডেস্ক: সবার জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ এর পথে দ্রুত এগিয়ে যেতে ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি), বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং গ্রামীণফোন যৌথভাবে ‘‘ফিউচারনেশন: গ্রাজুয়েট এমপ্লয়মেন্ট ইন প্রাইভেট সেক্টর’’ কর্মসূচি উন্মোচন করেছে। বৈশ্বিক অতিমারি কাটিয়ে উঠতে তরণদের সঙ্গে নিয়ে, তাঁদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারি, বেসরকারি ও উন্নয়ন খাতের যৌথ উদ্যোগ, ফিউচারনেশন, উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, উদ্যোগ ও বিনিয়োগের সুযোগ তৈরিতে কাজ করছে।
আজ রবিবার (৭ আগস্ট) ঢাকার একটি স্থানীয় হোটেলে আয়োজিত ‘ফিউচারনেশন: গ্র্যাজুয়েট এমপ্লয়মেন্ট ইন প্রাইভেট সেক্টর’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপি’র স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজার রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, বিডা’র ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশনের নির্বাহী সদস্য মোহসিনা ইয়াসমিন, ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি এবং গ্রামীণফোন’র প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান। সভাপতিত্ব করেন বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে সালমান এফ রহমান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পর সরকার এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে (ফোরআইআর) সফলভাবে অংশ নেয়ার লক্ষ্য নিয়েছে। এজন্য সরকার আইসিটির বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে, দেশের সমৃদ্ধি ধরে রাখর যা পূর্বশর্ত।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুফল ভোগ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এক অনন্য অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু এই সুফল পেতে হলে টেকসই কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি এবং তরুণদের ডিজিটাল দক্ষতায় দক্ষ করে তোলা গুরুত্বপূর্ণ। দেশকে সার্বিকভাবে ডিজিটালি কানেক্টেড করার মাধ্যমে শহর ও গ্রামাঞ্চলের মধ্যে বৈষম্য কমাতে আমাদের অবশ্যই একযোগে কাজ করতে হবে। ফিউচারনেশন সেই লক্ষ্যে যৌথ প্রয়াসেরই ফলাফল।
রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, উন্নত গ্রুমিং এবং বাস্তবসম্মত যাচাই বাছাই এঁর মাধ্যমে ফিউচারনেশন তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য যোগ্য করে তুলতে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে। প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনীর সহায়তায় দক্ষতা তৈরির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র এটি। এই ধরনের উদ্যোগ তরুণদের দক্ষতার উন্নয়ন করতে এবং হাতে-কলমে কাজের জন্য প্রস্তুত করতে নি:সন্দেহে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।
সুদীপ্ত মুখার্জী বলেন, বিশ্বব্যাপী চাকরির বাজার প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে। দ্রুতগতিতে অর্থনীতি ও প্রযুক্তির বদলে যাওয়ার ফলে নতুন বাস্তবতার সঙ্গে তরুণেরা যেন খাপ খাইয়ে নিতে পারেন, আমাদের তা নিশ্চিত করতে হবে।
ইয়াসির আজমান বলেন, আমি ভবিষ্যতের শিল্পখাতের জন্য বাংলাদেশের তরুণদের প্রস্তুত করে তোলার ক্ষেত্রে, তাদের সঙ্গে কাজ করার প্রচুর সম্ভাবনা দেখছি। এটি করার এখনই সময়! ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উন্নত জাতিতে পরিণত হওয়ার অগ্রযাত্রায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে তরুণরা।
প্ল্যাটফর্মটি উন্মোচনের পর ‘গ্র্যাজুয়েট এমপ্লয়েন্ট চ্যালেঞ্জেস ইন বাংলাদেশ’ নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্যানেল আলোচক ছিলেন বিডা’র ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশনের নির্বাহী সদস্য মোহসিনা ইয়াসমিন; বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ; বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ; ইউনিলিভার বাংলাদেশ ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার; ইউএনডিপি’র পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী; টেলিনর’র এসভিপি হাকোন ব্রুয়াসেত জোল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিই সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক রাশেদুর রহমান এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের ডেপুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ ভ্যান নুয়েন।
ফিউচারনেশন ‘হোম-গ্রোন অ্যাপটিটিউড অ্যাসেসমেন্ট টুল’ তৈরি করেছে, যা করপোরেট ও বেসরকারি খাতকে তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা থাকা উপযুক্ত কর্মী খুঁজে পেতে সহায়তা করবে। এ প্রোগ্রামের জন্য ওয়ালটন, আকিজ, প্রাণ-আরএফএল, আবুল খায়ের গ্রুপ, নাসির গ্রুপ, নগদ এবং এসিআইসহ স্বনামধন্য অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে সম্ভাব্য নিয়োগদাতা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি, ফিউচারনেশনের জন্য সম্ভাব্য অ্যাকাডেমিয়া হিসেবে কাজ করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।