সাম্প্রতিক সংবাদ

সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে দেশে প্রথম বাংলা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

ক.বি.ডেস্ক: সেমিকন্ডাক্টর আজ বৈশ্বিক প্রযুক্তি শিল্পের প্রাণভোমরা। অথচ দেশের সাধারণ জনগণের কাছে আজও এক অচেনা খাত। যা কেবল ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছেই সীমাবদ্ধ। সেই অচেনা খাতকে দেশের সবস্তরের জনগণের কাছে পরিচিত করতে বাংলায় রচিত প্রথম সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে বই ‘প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় সেমিকন্ডাক্টর ও বাংলাদেশের সম্ভাবনা’- এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় সেমিকন্ডাক্টর বিশষজ্ঞ ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা মোহাম্মাদ এনায়েতুর রহমান দেশেই গড়ে তুলেছেন বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর প্রতিষ্ঠান উল্কাসেমি। সেই অভিজ্ঞতা ও এই শিল্পে বাংলাদেশের ভবিষ্যত ভাবনা নিয়ে বাংলা ভাষায় তিনি লিখেছেন ‘প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় সেমিকন্ডাক্টর ও বাংলাদেশের সম্ভাবনা’ নামের বই। এই বই প্রকাশের মাধ্যমেই প্রকৌশলী থেকে লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেন মোহাম্মাদ এনায়েতুর রহমান।

গতকাল শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে উল্কাসেমি’র প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে দেশের প্রথম বাংলা ভাষায় রচিত বই ‘প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় সেমিকন্ডাক্টর ও বাংলাদেশের সম্ভাবনা’- এর মোড়ক উন্মোচন করেন ব্রুনাই হাইকমিশনের ফাস্ট সেক্রেটারি রোজাইমি আব্দুল্লাহ, মাইক্রোসফটের বাংলাদেশ, ভূটান ও নেপালের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইউসুপ ফারুক, উল্কাসেমির চেয়ারম্যান ডা. আরিফা চৌধুরী রহমান এবং বইয়ের লেখক ও উল্কাসেমির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনায়েতুর রহমান।

বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাইনুল হোসেন, এইউএসটি’র অধ্যাপক ড. ববি বড়ুয়া, এআইইউবি’র সহযোগী অধ্যাপক ড. শাহরিয়ার মাসুদ রিজভী, ইউএপি’র অধ্যাপক ড. জি আর আহমেদ জামাল, আইইউটি’র সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ, ডিআইইউ’র সহযোগী অধ্যাপক মো. দারা আব্দুস সাত্তার ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. রেজওয়ানুল আহসান, ডুয়েট গাজিপুর এর অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আবেদীন এবং প্রকাশক মোহাম্মদ মাশফিকউল্লাহ।

বইটির লেখক বাংলাদেশের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের পথিকৃৎ এবং উল্কাসেমির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনায়েতুর রহমান। স্টুডেন্ট-ওয়েজ থেকে প্রকাশিত বইটি দেশের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে বাংলা ভাষায় লেখা প্রথম পূর্ণাঙ্গ বই। এতে সমসাময়িক বিষয় থেকে শুরু করে সেমিকন্ডাক্টরের মৌলিক ধারণা, বৈশ্বিক শিল্পে এর গুরুত্ব এবং বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনার রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। প্রকৌশল শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের জন্য এতে রয়েছে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার সঙ্গে মিলিয়ে অসংখ্য দিকনির্দেশনা। ৯৪ পৃষ্ঠার বইটি ১১টি অনুচ্ছেদে লেখা। বইটির মূল্য ৩০০ টাকা।

এনায়েতুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশ দ্রুত রূপান্তরের পথে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ফাইভ জি এবং আইওটি নির্ভর প্রযুক্তি সূচনা করবে। সেই প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির মূল চালিকা শক্তি হতে পারে সেমিকন্ডাক্টর। এক্ষেত্রে দক্ষ জনবল এবং উৎপাদন প্রক্রিয়া নিয়ে ভাবনা জরুরী। এক্ষেত্রে জনসচেতনতা বাড়ানো চ্যালেঞ্জের হলেও কাজটি করছি নিরলস ভাবে। যখন আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর দিকে তাকাই, আমি শুধু প্রতিযোগিতা দেখি না; আমি একটি কর্মপরিকল্পনা দেখি। বাংলাদেশ কেন এই সাফল্য অর্জন করতে পারবে না। আমাদের মেধাবী ছাত্রছাত্রীরাই সেই ভবিষ্যৎ গড়ার মূল চাবিকাঠি। আর তাদের সহযোগী হবে শিক্ষক ও তাদের অভিভাবক। তাই এই বইটি সবার জন্য।”

উল্লেখ্য, বর্তমান প্রযুক্তি, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সেমিকন্ডাক্টর চিপের ওপর নির্ভরশীল। ভবিষ্যতের এই নেতৃত্বস্থানীয় প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে দেশের শীর্ষস্থানীয় সেমিকন্ডাক্টর প্রতিষ্ঠান উল্কাসেমি। প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছে সাড়ে পাঁচশ বাংলাদেশী দক্ষ ইঞ্জিনিয়ারদের শক্তিশালী দল। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পকে মাল্টি বিলিয়ন ডলারের বাজারে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *