সংসদে সাইবার নিরাপত্তা বিল, ২০২৩ উত্থাপন
ক.বি.ডেস্ক: বহুল আলোচিত সাইবার নিরাপত্তা বিল সংসদে ওঠেছে। জাতীয় সংসদে আজ মঙ্গলবার ‘‘সাইবার নিরাপত্তা বিল, ২০২৩’’ উত্থাপন করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বিলটি উত্থাপনের আপত্তি করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম। কিন্তু সংসদ সদস্যদের কণ্ঠভোটে তা নাকচ হয়ে যায়।
প্রতিমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ‘সাইবার নিরাপত্তা বিল, ২০২৩’ অধিকতর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের জন্য ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করেন।
ফখরুল ইমাম আপত্তি জানিয়ে বলেন, অংশীজনরা এই বিলের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের সঙ্গে প্রস্তাবিত আইনের মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই। প্রস্তাবিত আইনকে টিআইবি কালো আইন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। মানুষের মৌলিক অধিকার যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মত প্রকাশ ও চিন্তার স্বাধীনতা। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বন্ধের উপাদান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ছিলো, খসড়া আইনেও রাখা হয়েছে। অনেকেই এই খসড়া আইনকে নিবর্তনমূলক বলে মনে করছেন।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১’ বাস্তবায়নের লক্ষে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ শনাক্তকরণ, প্রতিরোধ, দমন ও এসব অপরাধের বিচার এবং আনুষঙ্গিক বিষয়ে নূতন একটি আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন। তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাইবার নিরাপত্তা আইন ও এ সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮’ রহিতক্রমে বাস্তবতার নিরিখে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’ প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
সাইবার কার্যক্রমের বিস্তৃতির সঙ্গে সঙ্গে সাইবার অপরাধের প্রবণতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই আইনের আওতায় বিভিন্ন দেশের সাইবার নিরাপত্তা সংস্থাসমূহের মধ্যে সমন্বয়সাধন, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রদান এবং সাইবার ঝুঁকি ও হুমকিসমূহের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্কীকরণ ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দেশের সাইবার স্পেসের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণই এই আইনের অন্যতম উদ্দেশ্য।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান প্রয়োজন, সময়ের চাহিদার প্রেক্ষিতে আইসিটি উপদেষ্টার পরামর্শে, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা, আইনমন্ত্রী সময়ে সময়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জাতীয় পর্যায়ের সংবাদ মাধ্যম, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবাধিকার সংস্থা, সবার সঙ্গে আলোচনা করেই সাইবার সিকিউরিটি আইনটি উত্থাপন করা হয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে যেগুলো অজামিনযোগ্য ছিল সেখানে জামিন যোগ্য করা হয়েছে। চারটি ধারা শুধু অজামিনযোগ্য হিসাবে প্রস্তাব করা হয়েছে।
বহুল বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে সাইবার নিরাপত্তা আইন হচ্ছে। তবে নতুন আইন নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে সাংবাদিক ও অধিকারকর্মীদের। প্রস্তাবিত আইনের খসড়ার ওপর অংশীজনদের মতামতও নেয়া হয়নি।
তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সংসদীয় কমিটিতে পরীক্ষা করার সময় সংশ্লিষ্টদের মতামত নেয়া হবে। এদিকে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী বলেছেন, সাইবার নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বা সাংবাদিকতা করতে যেন বাধা সৃষ্টি না হয়, সেদিকে সরকার খেয়াল রাখবে।