শুরু হলো ‘নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৩’
ক.বি.ডেস্ক: বিশ্বের সবচেয়ে বড় হ্যাকাথনের বাংলাদেশ পর্ব আয়োজন করছে বেসিস। শুরু হলো টানা ৯ম বারের মতো বেসিস এবং বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের সহযোগিতায় ‘‘নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৩’’। আজ শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই হ্যাকাথন একটানা ৩৬ ঘন্টা চলবে। শনিবার (৭ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হবে সমাপনী অনুষ্ঠান।
এবার বাংলাদেশের ৯টি শহর (ঢাকা, চট্রগ্রাম সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ এবং কুমিল্লা) থেকে ২ হাজারেরও বেশি প্রতিযোগী অংশ নিয়েছে। সর্বমোট ২১০টি প্রকল্পের মধ্যে হাইব্রিড মডেলে বাছাইকৃত শীর্ষ ৫০ নিয়ে আইইউবি’তে এবং বাকি ১৬০টি প্রকল্প নিয়ে অনলাইনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুই দিনব্যাপী (৬-৭ অক্টোবর) এই হ্যাকথন।
আজ শুক্রবার (৬ অক্টোবর) ইন্ডিপেন্ডেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (আইইউবি) এর ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত ‘নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৩’ এর উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি আইসিটি সচিব মো. সামসুল আরেফিন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ এবং নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৩ এর আহ্বায়ক তানভীর হোসেন খান। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের উপদেষ্টা মোহাম্মদ মাহদী-উজ-জামান এবং আরিফুল হাসান অপু।
সচিব মো. সামসুল আরেফিন বলেন, একটি দেশের উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য সায়েন্টিস্ট তৈরি করা বিশেষভাবে জরুরী। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য নিয়ে আগাচ্ছি। এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে আমাদের প্রযুক্তির সকল খাতে সমানভাবে উন্নয়ন করতে হবে। এই উন্নয়নের জন্য আমাদের তরুণদেরকে বেশি বেশি উৎসাহ প্রদান করা প্রয়োজন এবং এই প্রযুক্তিভিত্তিক উন্নয়নের মাধ্যমেই আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। আগামীতে বিজ্ঞানী হবার জন্য তরুণদের মধ্যে উৎসাহ এবং ইচ্ছা থাকা বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি এটিও গুরুত্বপূর্ণ যে, তরুণদের মধ্যে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির প্রতি উৎসাহ প্রদান করা অত্যন্ত জরুরী।
রাসেল টি আহমেদ বলেন, বেসিস টানা ৯ম বারের মতো এই আয়োজন করছে। এর মধ্যে বিগত পাঁচ বছরে আমরা তিনবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। যখন দেখি তোমাদের মধ্যে কেউ নাসায় গিয়ে বাংলাদেশের পতাকাটা উঁচু করে ধরে তখন আমাদের বুকটা ভরে যায়। তখন মনে হয় আমাদের এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা সফল হয়েছে। এটি এমন একটি প্রতিযোগিতা যার মাধ্যমে সবচেয়ে স্বাধীনভাবে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির প্রতি উৎসাহ দেয়ার একটি দরজা খুলতে সাহায্য করবে। আমি বিশ্বাস করি যে এই ধরনের প্রোগ্রামের মাধ্যেমে আমাদের তরুণদের মধ্যে আগামীতে বিজ্ঞানী হবার ইচ্ছা ও আকাঙক্ষা তৈরি হবে। বিগত তিনবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরবের ধারা অব্যহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
৩৬ ঘন্টা টানা হ্যাকথন আয়োজনের পর আগামীকাল ৭ অক্টোবর (শনিবার) সন্ধ্যায় আইইউবি’তে অনুষ্ঠিত হবে সমাপনী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান প্রধান অতিথি থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি ইন্ডিপেন্ডেট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)-এর উপাচার্য তানভীর হাসান এবং সম্মানিত অতিথি বাংলাদেশের ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের অর্থনীতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কর্মকর্তা জেমস গার্ডিনার।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ‘লুনার ভিআর প্রজেক্ট’ বেস্ট ইউজ অব ডাটা ক্যাটাগরিতে চাঁদে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা দিবে এমন ভার্চুয়াল অ্যাপ্লিকেশন ফুটিয়ে তুলে ধরে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টিম অলীক’। ২০২১ সালে ‘বেস্ট মিশন কনসেপ্ট’ ক্যাটাগরিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এবং বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (বাউয়েট) সম্মিলিত দল ‘টিম মহাকাশ’। ২০২২ সালে ‘টিম ডায়মন্ডস’ ‘সবচেয়ে অনুপ্রেরণামূলক’ বিভাগে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্র্রেশন-নাসা আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বের ১৮৫টি দেশের প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী, ডিজাইনার, আর্টিস্ট, শিক্ষাবিদ, উদ্যোক্তাদের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রের মেধাবী তরুণদের একত্রিত করে পৃথিবীর বিভিন্ন বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানে উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করার লক্ষ্যে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।