শিক্ষার্থীদের জন্য তৈরি হচ্ছে ব্লেন্ডেড শিক্ষা মহাপরিকল্পনা
ক.বি.ডেস্ক: ২০৪১ সালের মধ্যে উদ্ভাবনী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী গুণগত শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে তৈরি হচ্ছে ‘‘ব্লেন্ডেড শিক্ষা মহাপরিকল্পনা’’। যা শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী অনলাইন-অফলাইন উভয় পদ্ধতিতে শিক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করবে। এলক্ষ্যে ব্লেন্ডেড শিক্ষা বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্স কর্তৃক ব্লেন্ডেড শিক্ষা মহাপরিকল্পনার খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে।
শিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে নিয়ে গঠিত ব্লেন্ডেড শিক্ষা বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্স দুই দিনব্যাপী (৯-১০ মার্চ) সাভারে ব্লেন্ডেড শিক্ষা মহাপরিকল্পনা চূড়ান্তকরণ কর্মশালা মাধ্যমে এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। খসড়া এই মহাপরিকল্পনায় শিক্ষা কার্যক্রমকে অফলাইন ও অনলাইন উভয় মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ, পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি ডিজিটাল কনটেন্ট নির্মাণ, ধারাবাহিক মূল্যায়ন পদ্ধতি চালুকরণ, শিক্ষকদের এই সংশ্লিষ্ট দক্ষতা উন্নয়নের জন্য ব্লেন্ডেড প্রশিক্ষণ ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ করার সুপারিশ করা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রী এবং ব্লেন্ডেড শিক্ষা বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের সভাপতি ডা. দীপু মনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উদ্ভাবনী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ব্লেন্ডেড শিক্ষা মহাপরিকল্পনা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। ভবিষ্যতের বাংলাদেশের জন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী দক্ষতা বৃদ্ধি করা এবং তাদের প্রত্যেককে সমস্যা সমাধানে দক্ষ করে গড়ে তোলা প্রয়োজন। শিক্ষাব্যবস্থাকে এমনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে যেন শিক্ষার্থীদের সবধরনের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি উন্নয়নের পাশাপাশি সমস্যা সমাধানে দক্ষ হয়ে আই-এম-দি-সলিউশন হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। ব্লেন্ডেড শিক্ষা মহাপরিকল্পনা শুধু শিক্ষাব্যবস্থাকেই পরিবর্তন করবে না, পরিবর্তন করবে বাংলাদেশকে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ব্লেন্ডেড শিক্ষা বাস্তবায়নে কানেক্টিভিটির কোন বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে শিক্ষা অবকাঠামোতে বিনিয়োগ জোরদার প্রয়োজন। প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের আওতায় নিয়ে আসা পাশাপাশি প্রতিটি শ্রেণীকক্ষে পর্যাপ্ত ডিভাইসের ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে ডাক ও টেলিযোগযোগ বিভাগ এবং আইসিটি বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাশে থাকবে। মাতৃভাষায় মানসম্মত ডিজিটাল কনটেন্ট প্রস্তুত করার উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি অংশিদারিত্ব নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
জাতীয় টাস্কফোর্সের ৭টি উপকমিটি কর্তৃক প্রণীত খসড়া পরিকল্পনাসমূহ একীভূত করে মহাপরিকল্পনার পূর্ণাঙ্গ খসড়া ব্লেন্ডেড শিক্ষা বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের সভাপতি ডা. দীপু মনির কাছে উপস্থাপন করা হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরর পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রফেসর ড. একিউএম শফিউল আজম এবং এটুআইর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী মহাপরিকল্পনার খসড়া উপস্থাপন করেন। বিটিআরসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল কানেক্টিভিটি স্থাপন পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।
ব্লেন্ডেড শিক্ষা বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের সদস্য সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীকর সভাপতিত্বে ব্লেন্ডেড পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় যুক্ত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ কামাল হোসেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিদ চন্দ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ মশিউর রহমান,বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, বিএসসিএল চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ প্রমুখ।