মাদক প্রতিরোধে ‘লাভ’ অ্যাপস
ক.বি.ডেস্ক: মাদক প্রতিরোধে বিভিন্ন সময় নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রাজধানীসহ সারাদেশে প্রতিদিনই চালানো হচ্ছে অভিযান। গ্রেপ্তার করা হচ্ছে মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী। ধারাবাহিক মাদকবিরোধী অভিযানেও থেমে নেই মাদক বেচাকেনা। সীমান্ত কিংবা আকাশ বা নৌ, নতুন নতুন পথে ঢুকছে মাদক। কিন্তু কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না মাদকের কারবার।
এবার মাদক প্রতিরোধে জনগণকে সম্পৃক্ত করাসহ মাদক নির্মূলে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে ডিএনসি। ‘লাভ’ (লাইভ অপারেশন্স ভিজিবল এক্সিকিউশন) নামক একটি নতুন অ্যাপস চালু করতে যাচ্ছে সংস্থাটি। এই অ্যাপসের মাধ্যমে দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে মাদক কারবারি বা সেবনকারীদের ছবি, ভিডিওসহ তথ্য ডিএনসি’র প্রধান কার্যালয়ে পৌঁছে দিতে পারবেন যে কেউ। মাদক-সংক্রান্ত লাইভ ভিডিও এবং ছবি তুলে পাঠানো যাবে এই অ্যাপসের মাধ্যমে।
অ্যাপসটির অ্যাডমিন প্যানেল থাকবে ঢাকার সেগুনবাগিচায় ডিএনসি’র প্রধান কার্যালয়ে। ইতোমধ্যে অ্যাপস পরিচালনার ও তথ্য পাওয়ার পর অপারেশনাল কার্যক্রম চালানোর বিষয়ে ঢাকায় কর্মকর্তাদের নিয়ে কর্মশালা করা হয়েছে। এটি সহজ করতে সেখান থেকেও উঠে এসেছে নানা পরামর্শও। সেসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে বিভাগীয় পর্যায়ও কর্মশালার পরিকল্পনা রয়েছে ডিএনসি’র।
সেবন বা বিক্রি করছেন এমন কোনো দৃশ্য যে কেউ অ্যাপসে ঢুকে লাইভ ভিডিও করতে পারবেন। পাশাপাশি ছবি তুলেও পাঠাতে পারবেন। এটি মুহূর্তেই সদরদপ্তরে স্থাপিত প্যানেলে চলে যাবে। ছবি ও ভিডিও পাঠানোর সময় যদি কেউ স্পটের নাম উল্লেখ করতে না পারেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে গুগল ম্যাপের মাধ্যমে তা চিহ্নিত করা হবে প্যানেল থেকে।
এরপর প্যানেল থেকে সংশ্লিষ্ট জেলার কর্মকর্তার কাছে এই তথ্য পাঠানো হবে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। তথ্যদাতার পরিচয় গোপন রাখারও সুযোগ থাকছে অ্যাপসে। সে ক্ষেত্রে তথ্যদাতার ফোনে প্যানেল থেকে ওটিপি নম্বর পাঠানো হবে।
তিনি যে তথ্য দিয়েছেন সে ব্যাপারে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বা আদৌ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা তা ওটিপি নম্বর দিয়ে অ্যাপসে ঢুকে জানতে পারবেন। এ ছাড়া কেউ মাদক-সংক্রান্ত আগের তোলা কোনো ছবি বা ভিডিও কিংবা কোনো তথ্য দিলে তা যাচাই-বাছাই করে মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অ্যাপসটি চালু হলে মাদক অপরাধ কমে আসবে বলে আশা করছেন ডিএনসি’র কর্মকর্তারা। অ্যাপস-সংক্রান্ত কার্যক্রমে অতিরিক্ত বা আলাদা জনবল প্রয়োজন হবে না। দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে মাদক-সংক্রান্ত সংবাদপ্রাপ্তি সহজ হয়ে উঠবে। ফলে দেশে মাদক ব্যবসা ও মাদক গ্রহণ অনেকাংশে কমে আসবে। অধিদপ্তরের অভিযান কার্যক্রম গতিশীলের পাশাপাশি জবাবদিহিতা তৈরি হবে।
সব শ্রেণি-পেশার মানুষ মাদক কারবারি ও সেবনকারীদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান নেয়ার সুযোগ পাবে। এটি একটি সৃজনশীল উদ্যোগ। এর বাস্তবায়নে কাজ চলছে। অ্যাপসের মাধ্যমে দেয়া তথ্যকারী চাইলে তার নাম-পরিচয় গোপন রাখতে পারবেন। তাদের দেয়া তথ্যে ব্যবস্থা নেয়া হবে।