ভবিষ্যৎ স্মার্ট বাংলাদেশকে তুলে ধরছে ৫০টি প্রতিষ্ঠান
ক.বি.ডেস্ক: জেসিআই স্মার্ট বাংলাদেশ সামিটের পাশাপাশি চলছে এক্সপো। সেখানে ৫০টি স্টল ও প্যাভিলিয়নে নিজেদের তৈরি পণ্য ও সেবার প্রদর্শন করছে দেশের ৫০টি কোম্পানি। রাজধানীর আইসিসিবি’র ৩ নম্বর হলে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এক্সপোতে নানা ধরনের উদ্ভাবনী সব পণ্য ও সেবার সমাহার সাজিয়ে বসেছেন কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা।
এক্সপো জোনে প্রচুর দর্শনার্থী সমাগম ঘটে। এক্সপো জোন উন্মুক্ত করার পর থেকেই দর্শনার্থীরা প্রবেশ করছেন। তারা ঘুরে ঘুরে দেখছেন ডিজিটাল বাংলাদেশের সব উদ্ভাবনী উদ্যোগ।
সেখানে ঘুরতে আসা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সামি বলেন, এক্সপোতে এসেছি স্মার্ট বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে। এখানে দেখলাম দেশের স্বনামধন্য কিছু প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। তারা তাদের উদ্ভাবিত অনেক কিছুই এখানে দেখাচ্ছেন। যা আমি আগে জানতাম না।
আরেক শিক্ষার্থী উমাইরা মাহমুদ তন্বী বলেন, ‘আমি এসেছি স্মার্ট বাংলাদেশ নিয়ে দুটি সেশনে অংশ নিতে। তার আগে এক্সপো জোনে এসে ঘুরে দেখছি। সবাই তাদের পণ্য ও সেবা দেখাচ্ছে। ভালো লাগছে। পণ্য ও সেবার ব্যবহারে আমরা সত্যিই অনেক স্মার্ট হয়ে হয়েছি।
শিশুদের শিক্ষা নিয়ে কাজ করা প্ল্যাটফর্ম হিসেবে এক্সপোতে অংশ নেয়া ব্র্যাকের উদ্যোগ কুমন দেখাচ্ছে কীভাবে তারা শিশুদের শিক্ষায় এগিয়ে এসেছে। ব্র্যাকের এক কর্মী ও কুমনের প্রতিনিধি ইবনুল জানান, তারা স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে শিশুদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ছোটবেলা থেকেই যেন উন্নত শিক্ষা পায় সে নিয়ে কাজ করছেন। তারা প্রাকপ্রাথমিকের জন্য ইংরেজি ও গণিত শিক্ষা নিয়ে কাজ করছে। শুক্রবার ও শনিবার সকালেই তাদের স্টলে বেশ কয়েকজন ভিড় করেছেন এবং তাদের উদ্যোগ সম্পর্কে জানছেন।
ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) একদল শিক্ষার্থী এক্সপোতে তাদের উদ্ভাবন নিয়ে হাজির হয়েছেন। এই তরুণ উদ্ভাবকরা দেখাচ্ছেন তৈরি মার্সরোভার রোবট টিম অনির্বাণ ও টিম অভিযাত্রিক। সেখানে কথা হয় এক তরুণ রাইয়ান ইবনে হোসেন বলেন, তারা ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত দুটি মার্স রোভার তৈরি করেছেন। এ ছাড়া তাদের আরেকটি মার্সরোভাব আল্টএয়ার নিয়ে কাজ করছেন। সেটি অচিরেই প্রদর্শণ করবেন। এক্সপোতে অংশ নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের সহযোগী হতে চাই। এক্সপোতে অংশ নিয়ে আমাদের মার্সরোভার প্রদর্শনীর অন্যতম উদ্দেশ্য বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা। এসব এএক্সপো থেকেই সেটি করা সহজ হয়।
ক্লাউডে স্বয়ংক্রিয় উৎপাদন ব্যবস্থাপনা পর্যবেক্ষণ ও টিপসই প্রযুক্তি, ভেঙ্গে যাওয়া দাঁত কয়েক ঘণ্টাতেই জোড়া দেয়াসহ শিক্ষা-স্বাস্থ্য-কৃষি ও বিনোদেনের স্মার্ট প্রযুক্তি প্রর্দর্শিত হয় অর্ধশতাধিক স্টলে। ছিলো ক্যাশলেস কোম্পানি আমার পে; অ্যাপে গ্রামীণফোনের বই মেলা, ফাইভজি প্রযুক্তি; তৈরি পোশাক শিল্পের স্মার্ট সল্যুশন, স্মার্ট হোম ফিটিংস ও ফার্নিচারের মতো প্রদর্শনী। এর বাইরে গাড়ির গতি পর্যবেক্ষণ প্রযুক্তি, কানাডিয়ান প্রযুক্তির সার্ভিলেন্স রোবট ক্যামেরা যেমন ছিলো; তেমনি স্মার্ট বাংলাদেশের নানা সমাধান দেখিয়েছে বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। আইওটি ফ্রিজ প্রদর্শন করে ওয়ালটন। সকাল থেকেই স্টলে দর্শনার্থীরা যাচ্ছেন এবং তাদের প্রকল্প সম্পর্কে জানাতে চাইছেন।
এক্সপোর পাশাপাশি সমাপনী দিনে আজ (শনিবার) রয়েছে ৫টি সেশন। সেখানে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে করণীয় বিভিন্ন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট খাতের নীতিনির্ধারক, নেতৃবৃন্দ এবং আলোচকরা বিভিন্ন দিকনির্দেশনা তুলে ধরেন।
সকাল ১১টায় ‘স্মার্টার ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যান্ড ট্রেড’, বেলা ১২টায় ‘ফিন্যান্সিং দ্য ফিউচার : ক্যাপিটাল মার্কেট’, দুপুর ১টায় ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ইন দ্য আইজ অব ইয়ুথ’, বিকাল ৩টায় ‘স্মার্ট এডুকেশন’ এবং বিকাল ৪ টায় ‘ক্রিয়েটিং সাস্টেইনেবল অ্যান্ড রেসিলেন্ট স্মার্ট সিটিজ : দ্য রোল অব রিয়েল স্টেট’ শীর্ষক সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এদেশে সংশ্লিষ্ট খাতের নেতৃবৃন্দ ও আলোচকরা অংশ নেন।
জেসিআই বাংলাদেশের আয়োজনে ও এটুআই-এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘জেসিআই স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট, এক্সপো ও সিওয়াইই অ্যাওয়ার্ড ২০২৩’ আয়োজন। আয়োজনে সহযোগিতায় রয়েছে বেসিস, বিজিএমইএ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ডেইলি স্টার, এটুআই, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং ইউএনডিপি। প্রদর্শনীর আপডেট জানতে: www.jcisummit.com