বিকাশ অ্যাপ সুরক্ষিত রাখতে ‘ফেস আইডি’ ও ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট’
ক.বি.ডেস্ক: গ্রাহকের প্রতিদিনকার লেনদেন আরও সহজ ও নিরাপদ করতে বিকাশ অ্যাপে যুক্ত হলো বায়োমেট্রিক ‘ফেস আইডি’ ও ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট’ লগইন সুবিধা। পাশাপাশি, ‘গ্রুপ সেন্ড মানি’, ‘রিকোয়েস্ট মানি’, ‘সেভিংস মার্কেটপ্লেস’ ও ভিসা কার্ড থেকে অ্যাড মানি করতে ‘ডিফল্ট’ কার্ড সেভ করার মতো আকর্ষণীয় সব নতুন ফিচারও যুক্ত হয়েছে বিকাশ অ্যাপে।
ফেস আইডি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট
এখন থেকে বার বার পিন বা গোপন নাম্বার দিয়ে লগইন না করেও বায়োমেট্রিক ‘ফেস আইডি’ ও ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট’ ব্যবহার করে সহজেই ও নিরাপদে লগইন করতে পারবেন বিকাশ অ্যাপ ব্যবহারকারীরা। ফলে পিন ভুলে যাওয়া কিংবা বেহাত হওয়ার বিড়ম্বনা যেমন থাকছেনা, তেমনি বাড়লো বিকাশ অ্যাপের নিরাপত্তাও।
বিকাশ অ্যাপের লগইন স্ক্রিন অথবা প্রোফাইল থেকে এই সেবাটি চালু করতে পারবেন। গ্রাহকের প্রোফাইল থেকে বায়োমেট্রিক অপশনে ক্লিক করে পরের ধাপে পিন দিয়ে বায়োমেট্রিক লগইন চালু করতে হবে। ডিভাইসে সেট করা ‘ফেস আইডি’ ও ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট’ ব্যবহার করেই গ্রাহকরা বিকাশ অ্যাপে লগইন করতে পারবেন। প্রয়োজনমতো গ্রাহক আবার অ্যাপের প্রোফাইল থেকে ‘ফেস আইডি’ ও ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট’ সেবাটি বন্ধও করতে পারবেন।
বিকাশ অ্যাপের এই সেবাটি শুধুমাত্র ক্লাস ৩ বায়োমেট্রিক নিরাপত্তা সম্বলিত ডিভাইসে উপভোগ করা যাবে। নতুন কোনো ডিভাইস থেকে লগইন করলে, পিন পরিবর্তন করলে, বিকাশ অ্যাপে পিন লক হয়ে গেলে বা অ্যাপ আন-ইন্সটল করলে সেবাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে সেবাটি আবার চালু করতে হবে। এ ছাড়া, নিরাপত্তার স্বার্থে বায়োমেট্রিক লগইন চালু করার এক বছর পর আবার নতুন করে সেবাটি চালু করে নিতে হবে।
গ্রুপ সেন্ড মানি
এই সেবার মাধ্যমে গ্রাহকরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী কয়েকজনকে একসঙ্গে টাকা পাঠাতে পারবেন। টাকা পাঠাতে প্রথমে অ্যাপের হোম স্ক্রিন থেকে সেন্ড মানি অপশনে যেয়ে ‘গ্রুপ সেন্ড মানি’ আইকনে ক্লিক করতে হবে। এখানে গ্রুপের সদস্য যারা হবেন তাদের নাম্বার বা নাম সিলেক্ট করে, গ্রুপের একটি নাম দিয়ে নতুন গ্রুপ তৈরি করতে হবে। এরপর টাকার পরিমাণ লিখে পরবর্তী ধাপে পিন দিয়ে সম্মতি দিলেই গ্রুপের সবার কাছে টাকা পৌঁছে যাবে।
গ্রুপে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে গ্রাহক চাইলে সবাইকে সমপরিমাণ টাকা পাঠাতে পারবেন অথবা কোন সদস্য কতো করে টাকা পাবেন সেটা নির্ধারণ করে দিতে পারবেন। একটি গ্রুপে একসাথে সর্বোচ্চ ৭ জন সদস্য রাখা যাবে। একবার গ্রুপ সেন্ড মানি করার ১০ মিনিট পর আর একটি লেনদেন করা যাবে। গ্রাহকরা অ্যাপের সেন্ড মানি অপশন থেকে গ্রুপের নাম ও সদস্যদের তথ্য পরিবর্তন করতে পারবেন। ইনবক্সে গিয়ে ‘লেনদেনসমূহ’ অথবা বিকাশ মেন্যুর ‘স্টেটমেন্ট’ থেকে কে কতো টাকা পেল সেটা দেখা যাবে।
রিকোয়েস্ট মানি
বিকাশ গ্রাহক প্রয়োজন অনুযায়ী অন্য যেকোনো বিকাশ গ্রাহকের কাছে টাকা চাইতে ইন-অ্যাপ রিকোয়েস্ট পাঠাতে পারবেন। গ্রাহকরা অ্যাপের হোম স্ক্রিন থেকে ‘রিকোয়েস্ট মানি’ আইকনে ট্যাপ করে সেন্ড মানি রিকোয়েস্ট পাঠাতে পারবেন। এক্ষেত্রে এক দিনে সর্বোচ্চ ১০ জনকে (ব্যক্তি রিকোয়েস্ট এবং গ্রুপ রিকোয়েস্ট মিলিয়ে) রিকোয়েস্ট পাঠাতে পারবেন। এক দিনে সর্বোচ্চ ২৫,০০০ টাকা রিকোয়েস্ট করা যাবে। যেকোনো রিকোয়েস্টের সর্বনিম্ন পরিমাণ ১০০ টাকা হতে হবে। রিকোয়েস্ট মানি-এর ক্ষেত্রে কোনো অতিরিক্ত চার্জ প্রযোজ্য হবেনা।
সেভিংস মার্কেটপ্লেস
বিকাশ অ্যাপে সেভিংস স্কিম খোলা এবং সহজেই কিস্তি জমা দেয়ার সুবিধা পাওয়া যাবে এই নতুন সেবার মাধ্যমে। নির্ধারিত তারিখে কিস্তির টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেটে নেয়ার পাশাপাশি এখন থেকে ঢাকা ব্যাংক ও আইডিএলসি-এর সেভিংস স্কিম নেয়া গ্রাহকরা তাদের মিস হয়ে যাওয়া কিস্তির টাকাও সহজে পরিশোধ করতে পারবেন। এ ছাড়াও সেভিংসের পরিমাণ, কিস্তি জমা দেয়ার নোটিফিকেশন, মিস হয়ে যাওয়া কিস্তির তালিকা, সেভিংস ম্যাচিউর হওয়ার সময়সহ আরও বিভিন্ন সুবিধা থাকছে এই সেবায়।
ডিফল্ট’ কার্ড সুবিধা
ভিসা কার্ড থেকে বিকাশ-এ অ্যাড মানি করার ক্ষেত্রে এখন আর বার বার কার্ড-এর তথ্য দেয়ার প্রয়োজন নেই। গ্রাহকরা নিজের পছন্দের ভিসা কার্ডটি ‘ডিফল্ট’ কার্ড হিসেবে নির্ধারণ করে রাখতে পারবেন। ডিফল্ট কার্ড নির্ধারণ করতে অ্যাপের হোম স্ক্রিনের অ্যাড মানি অপশন থেকে কার্ড টু বিকাশ -এ যেয়ে ভিসা সিলেক্ট করতে হবে। পরের ধাপে অ্যাড মানি করার জন্য নাম্বারটি প্রবেশ করাতে হবে বা কন্টাক্ট লিস্ট থেকে সিলেক্ট করতে হবে। এরপর কার্ড-এর তথ্য দিয়ে অ্যাড মানি করার পর কার্ডটি ডিফল্ট কার্ড হিসেবে নির্ধারণ করে নিতে হবে। এরপর থেকে অ্যাড মানি করার সময়ে ডিফল্ট কার্ডটি স্ক্রিনের নিচে দেখা যাবে। গ্রাহক চাইলে অ্যাপ থেকেই কার্ড-এর তথ্য পরিবর্তন করতে পারবেন।
সর্বশেষ যুক্ত এই সেবা ও ফিচারগুলোর পাশাপাশি এই মুহূর্তে বিকাশ গ্রাহকরা সেন্ড মানি, মোবাইল রিচার্জ, ক্যাশ ইন, ক্যাশ আউট, মার্চেন্ট পেমেন্ট, অ্যাড মানি, ইউটিলিটি বিল পেমেন্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ফি পরিশোধ, ই-টিকেটিং, ডোনেশন, বিদেশ থেকে রেমিটেন্স গ্রহণ, ইন্স্যুরেন্স ও মাইক্রোফাইন্যান্স এর পেমেন্ট, ডিজিটাল ন্যানো লোন ও সেভিংস সহ নানান সেবা ব্যবহার করছেন। গ্রাহক-বান্ধব সেবার মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল লাইফস্টাইল অ্যাপে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে নিরন্তর উদ্ভাবন অব্যাহত রেখেছে বিকাশ।