বাক্কো মেম্বারস মিট এবং নতুন ইসি’র অভিষেক
ক.বি.ডেস্ক: আইসিটি খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৩৯০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশান অব কনট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো)। ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এ ছোট্ট সংগঠনটি কালের পরিক্রমায় আজ দেশের আইসিটি খাতে অবদান রেখে চলা এক অন্যতম সংস্থা। বাক্কো বিশ্বাস করে সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোই তাদের পথচলার চালিকাশক্তি। তারই অভিপ্রায়ে, বাক্কো বিগত বছরগুলোর ন্যায় এ বছরও আয়োজন করেছে “বাক্কো মেম্বারস মিট ২০২৪” প্রীতি সম্মিলনী অনুষ্ঠান।
গতকাল শনিবার (৪ মে) রাজধানীর একটি স্থানীয় কনভেনশন হলে আয়োজিত ‘বাক্কো মেম্বারস মিট ২০২৪’- অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিটিআরসি’র ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান। বক্তব্য রাখেন বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ, সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন এবং জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. আবুল খায়ের।
বাক্কো মেম্বারস মিট ২০২৪ প্রীতি সম্মিলনীর পাশাপাশি বাক্কো’র নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদ (ইসি) এর অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বাক্কো’র ২০২৪-২৬ মেয়াদের ইসি’র সভাপতি হলেন ডিজিকন টেকনোলজিসের ওয়াহিদ শরীফ এবং সাধারণ সম্পাদক ফিফোটেকের তৌহিদ হোসেন। জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি টাইমস এএসএল কল সেন্টারের মো. আবুল খায়ের; সহসভাপতি অটোমেশন সলিউশন্সের তানভীর ইব্রাহীম; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাই আউটসোর্সিংয়ের মো. তানজিরুল বাসার এবং অর্থ সম্পাদক ইম্পেল সার্ভিস অ্যান্ড সলিউশন্সের মোহাম্মদ আমিনুল হক। ছয় জন পরিচালক হলেন- এনরুট ইন্টারন্যাশনালের আবু দাউদ খান, স্কাইটেক সলিউশন্সের মুসনাদ ই আহমেদ, নোবেল আইটি সলিউশন্সের মো. ফজলুল হক, ভার্চুয়াল মার্কেট সলিউশনের আবদুল কাদের, আয়েশা সার্ভিসেস লিমিটেডের জায়েদ উদ্দীন আহমেদ এবং মনস্টারল্যাব এন্টারপ্রাইজ সলিউশন্সের মেহেদী হাসান জুলফিকার।
অনুষ্ঠানে বাক্কো আয়োজন করে সদস্যদের অংশগ্রহণে একটি উন্মুক্ত আলোচনা সভা। আলোচনায় বিপিও ইন্ডাস্ট্রি সম্প্রসারণের পথে বিদ্যমান সকল প্রতিবন্ধকতা হতে উত্তরণের উপায়, কর্মীসংস্থান, বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, প্রযুক্তির সংস্থায়ন ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নানাবিধ সমস্যার সমাধানে করণীয় সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ওঠে আসে।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ অচিরেই হয়ে ওঠতে চলেছে এক অন্যতম বিপিও ডেস্টিনেশন। কলসেন্টারের মাধ্যমে সরকার বর্তমানে নতুন নতুন সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। বিপিও শিল্প আমাদের সামনে একটি নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন করে দিয়েছে। আমাদের নতুন নতুন সেক্টরে সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। এ বছর আয়কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে, ইতিমধ্যে আইসিটি শিল্পের জন্য আয়কর অব্যাহতির মেয়াদ ২০২৪ সাল থেকে ২০৩১ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করার জন্য অর্থ প্রতিমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের নিকট জোর দাবি জানিয়েছি যেন এই সেক্টরটি আরও বিকশিত হতে পারে। ”
কাজী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, “বিপিও শিল্পের সম্প্রসারণে বিটিআরসি তার সর্বাত্মক সহযোগিতা অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে। সবাই সবার নিজ নিজ জায়গা থেকে চেষ্টা করে গেলে প্রযুক্তির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ লক্ষ্যমাত্রা সফল করা সম্ভব।”
ওয়াহিদ শরীফ বলেন, “বিপিও শিল্পের অভিলক্ষ্য ২০২৫ সালের মধ্যে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রাজস্ব আয় অর্জন ও ১ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সকল প্রতিবন্ধকতা হতে উত্তরণে আপনাদের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। নবনির্বাচিত কমিটি এই শিল্পের সম্প্রসারণে তাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। আমরা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি তাহলে অচিরেই প্রধানমন্ত্রীর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ করা সম্ভব।”
তৌহিদ হোসেন বলেন, “আইসিটি খাতের অন্তর্ভুক্ত শিল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘বিপিও’, যা ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে সেবা রপ্তানির মাধ্যমে বছরে ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রাজস্ব আহরণকারী নিয়ত-বর্ধনশীল এক শিল্পক্ষেত্র হয়ে ওঠেছে। বিপিও শিল্পে বর্তমানে কর্মরত জনসম্পদের সংখ্যা ৮০০০০+; যার ৪০ শতাংশই নারী। বাক্কো ২০২৫ সালের মধ্যে বিপিও শিল্পখাতে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রাজস্ব আয় তৈরি ও ১ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১’- লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে যাচ্ছে।”