বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’তে হিকভিশন
ক.বি.ডেস্ক: গাজীপুরের কালিয়াকৈরস্থ বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’তে বাংলাদেশের প্রথম নিরাপত্তা নজরদারী সরঞ্জাম উতপাদনের লক্ষে কারখানার ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করা হয়। এই কারখানায় বিশ্বখ্যাত নিরাপত্তা নজরদারী সলিউশন ব্র্যান্ড হিকভিশন’র অত্যাধুনিক নিরাপত্তা নজরদারী যন্ত্রপাতি তৈরি করা হবে। বাংলাদেশে হিকভিশন’র প্রথম ও জাতীয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এক্সেল টেকনোলজিসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এক্সেল ইন্টেলিজেন্ট সলিউশন্স লিমিটেড বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’র সেবা ভবনে প্রাথমিক পর্যায়ের এই কারখানা স্থাপন করছে। চীনের শীর্ষস্থানীয় নিরাপত্তা নজরদারী সমাধান প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিকভিশন ডিজিটাল টেকনোলজি কো. লিমিটেড এতে কারিগরী সহায়তা প্রদান করছে।
গতকাল শুক্রবার (২৫ মার্চ) বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’তে এই কারখানার ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. বিকর্ণ কুমার ঘোষ এবং হিকভিশন সাউথ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট হুগো হুয়াং। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন এক্সেল টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গৌতম সাহা।
অনুষ্ঠানে এন এম জিয়াউল আলম বলেন, আমাদের দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এই উতপাদন কারখানা স্থাপন তার সম্যক উদাহরণ। আর হিকভিশনের মতো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নিরাপত্তা নজরদারী পণ্য বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে, এটি আমাদের জন্য এক বিশাল অর্জন। এভাবে এখন আমাদের দেশে অনেক ডিভাইস তৈরি হওয়ার ফলে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ কর্মসূচি গতি পাচ্ছে। এ কারণে খুব শীঘ্রই সরকার ‘‘মেইড ইন বাংলাদেশ’’ নীতিমালা ঘোষণা করতে যাচ্ছে। সরকার টেন্ডারে স্থানীয়ভাবে উতপাদিত পণ্যকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, যাতে করে দেশে তৈরি পণ্যের বাজার সৃষ্টি হয়, উতপাদন বৃদ্ধি পায় এবং দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানী করা যায়।
ড. বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ইকোসিস্টেম এবং ক্রসকাটিং কার্যক্রমের অপরিহার্য অংশ। আমরা সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ উতসাহিত এবং তাদেরকে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছি। তাই কর্তৃপক্ষের সহায়তায় বেশ কিছু হাই-টেক পার্কে ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ল্যাপটপসহ অন্যান্য ডিভাইস তৈরি শুরু হয়েছে। তাই এখানে যুবকদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। হাই-টেক পার্কগুলোতে পূর্ণমাত্রায় উতপাদন শুরু হলে বাংলাদেশ আইসিটি পণ্য উতপাদনের হাবে পরিণত হবে, ৭৫% যুবক জনসংখ্যার কর্মসংস্থান হবে এবং মাথাপিছু আয়ে বিশ্বের সব দেশকে ছাড়িয়ে আমরা শতবর্ষ পূর্তিতে এক নম্বর উন্নত জাতিতে পরিণত হব।
হুগো হুয়াং বলেন, চীনের বাইরে ব্রাজিল ও ভারতের পর তৃতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশে হিকশিভন ব্র্যান্ডের পণ্য উতপাদনের পথে। হিকভিশন নিরাপত্তা নজরদারী যন্ত্রপাতি নির্মাতা হলেও অন্যান্য হাই-টেক পণ্য উতপাদন, প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং সেবা প্রদান করছে- রোবটিক্স, আইওটি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদি। বাংলাদেশের অর্থনীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এবং ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ কর্মসূচি বিশেষ ভূমিকা রাখছে। এসব ক্ষেত্রে হিকভিশন সহায়তা প্রদান করতে প্রস্তুত রয়েছে।
গৌতম সাহা বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ের এ শিল্প কারখানাকে বৃহদাকারে রূপদানের জন্য এখানে আমাদেরকে ইজারাদানকৃত দুই একর জমির উন্নয়ন কাজ চলছে। আশা করা যাচ্ছে আগামী বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’তে অধিক পরিমাণে হিকভিশন সিকিউরিটি ক্যামেরা ও আনুষঙ্গিক স্টোরেজসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ উতপাদন শুরু করা যাবে। তাতে নিরাপত্তা নজরদারী যন্ত্রপাতির দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে অচিরেই রপ্তানী করা যাবে। তাছাড়া পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে এখানে অন্যান্য ব্র্যান্ডের ডিজিটাল ডিভাইস, নেটওয়ার্কিং, টেলিকম, এআই ও রোবটিক্স যন্ত্রপাতি উতপাদন করা হবে।
বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে বৃহদাকারে নিরাপত্তা নজরদারী যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইস এবং নেটওয়ার্কিং, টেলিকম, এআই ও রোবটিক্স যন্ত্রপাতি তৈরির জন্য কারখানা স্থাপনের নিমিত্তে এক্সেল ইন্টেলিজেন্ট সলিউশন্স লিমিটেডের নামে ইজারাদানকৃত দুই একর জমির মাটি ভরাটসহ উন্নয়ন কাজের সূচনা করা হয়।