প্রযুক্তির মাধ্যমে মহামারি মোকাবেলায় সরকারের সঙ্গে ইজেনারেশন
গোটা পৃথিবী কোভিড-১৯ মহামারিতে জর্জরিত এবং বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ইতিমধ্যে দেশে সবচেয়ে লম্বা সময়ের সাধারণ ছুটি পালিত হয়েছে এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইজেনারেশন মহামারির শুরু থেকেই বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে এবং করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবেলায় বিভিন্ন প্রযুক্তিগত টুলস ও সলিউশন সহায়তা দিয়ে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি মনে করে যদি সরকারি ও বেসরকারি খাত যৌথভাবে এগিয়ে আসে এবং তাদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে এই পরিস্থিতি উতরে যাওয়া সম্ভব।
আধুনিক কর্মক্ষেত্র এবং রিমোট ওয়ার্কিং টুলস বাস্তবায়ন: ইজেনারেশন দেশের অন্যতম প্রতিষ্ঠান যারা দেশব্যাপী লকডাউন কার্যকর হবার আগে থেকেই বাড়িতে বসে কাজ শুরু করে এবং সরকারি ও বেসরকারি খাতে উদ্যোগটিকে উতসাহিত করে যাতে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও মহামারি চলাকালীন সময়ে নিরাপদে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে। মাইক্রোসফটের গোল্ড পার্টনার এবং বাংলাদেশে একমাত্র লাইসেন্সিং সলিউশন পার্টনার হিসেবে ইজেনারেশন কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় সম্মুখ ভাগে কাজ করা বিভিন্ন সরকারি অফিস, স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান, আর্থিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিনা মূল্যে মাইক্রোসফট টিমস সেবা চালু করে দিয়েছে যাদের মধ্যে রয়েছে ঢাকা (দক্ষিণ) সিটি কর্পোরেশন, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগ, সোনালী ব্যাংক, এটুআই, বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিল, বুয়েট, কুয়েট, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজসহ আরও অনেকে।
সরকারের সঙ্গে ‘সহযোদ্ধা – একটি প্লাজমা নেটওয়ার্ক’ চালু: সরকারের আইসিটি বিভাগ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং এটুআই এর সঙ্গে মিলে ইজেনারেশন ‘সহযোদ্ধা-একটি প্লাজমা নেটওয়ার্ক’ প্লাটফর্ম চালু করেছে। এর মাধ্যমে যেসব রোগী ইতিমধ্যে কোভিড-১৯ থেকে আরোগ্য লাভ করেছেন তাদের প্লাজমা সংগ্রহ করে অন্য সংকটপূর্ণ রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে জীবন রক্ষার্থে কাজ করছে প্লাটফর্মটি। এই উদ্যোগকে সফল করতে ইজেনারেশন দেশের শীর্ষস্থানীয় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগীতা স্থাপন করেছে যাতে এই জীবন রক্ষাকারী উদ্যোগটি অধিক সংখ্যক আক্রান্ত রোগীর কাছে পৌঁছাতে পারে।
কোভিড-১৯ মোকাবেলায় স্বাস্থ্যসেবায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সন্নিবেশ: গত দুই বছর ধরে ইজেনারেশন স্বাস্থ্য-প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা ও উন্নয়ন কাজ চালিয়ে আসছে। এই কাজের মাধ্যমে অর্জিত ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ সক্ষমতা প্রয়োগ করে ইজেনারেশন এআই-ভিত্তিক চ্যাটবট, মেশিন লার্নিং সম্বলিত এক্স-রে ইমেজ বিশ্লেষণ টুল, ক্লাউডভিত্তিক আইসিইউ সেবা, টেলিমেডিসিন এবং টেলিরেডিওলজি সলিউশন তৈরি করেছে যা দ্রুততর করোনাভাইরাস সংক্রমণ সনাক্তকরণ ও উন্নত চিকিতসা সেবা প্রদানে সহায়তা করতে সক্ষম। সম্প্রতি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি তাদের নিজস্ব ডেভলপকৃত হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট ইনরফরমেশন সিস্টেমের মাধ্যমে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট পাঁচটি হাসপাতাল স্বয়ংক্রিয়করণেও সহায়তা করেছে।
ডিজিটাল রূপান্তর রোডম্যাপ তৈরিতে খাতভিত্তিক নেতৃবৃন্দকে একত্র করা: গত এপ্রিল থেকে ইজেনারেশন দেশের শীর্ষস্থানীয় ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে খাতভিত্তিক ওয়েবিনার আয়োজন করছে আসছে। ব্যবসায়িক কার্যক্রম সচল রাখার উপায়; নিরবচ্ছিন্ন সাপ্লাই চেইন ও লজিস্টিক সেবা নিশ্চিত করা; স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার উন্নয়ন; কোভিড পরবর্তী ব্যবসার সুযোগ তৈরিতে গবেষণা ও উন্নয়ন; প্রয়োজনীয় পলিসি সহায়তা দিতে সরকারকে উদ্ভুদ্ধ করা এবং ঔষধ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, আর্থিক সেবা খাতসহ বিভিন্ন খাতকে এ সকল ক্ষেত্রে প্রযুক্তি কীভাবে সহায়তা করতে পারে তার কৌশল নির্ধারণে দেশি-বিদেশি নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের অংশগ্রহণে এই ওয়েবিনারগুলো আয়োজন করা হয়।
মাইক্রোসফট, এসএপি, ডেল, ইউআইপাথসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সহযোগী হিসেবে ইজেনারেশন সর্বাধুনিক ওয়ার্কপ্লেস সলিউশন, এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং, স্বাস্থ্য প্রযুক্তি, ক্লাউড সেবা, সাইবার সিকিউরিটি, বিগ ডেটা অ্যানালিটিক্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ব্লকচেইন, ইন্টারনেট অব থিংস, রোবোটিক প্রসেস অটোমেশন, ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং ও আইটি পরামর্শ সেবা দিয়ে আসছে। ইজেনারেশনের সরবরাহকৃত টুলস ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে বেশ কিছু সরকারি সেবায় আমূল পরিবর্তন এসেছে।
ইজেনারেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান শামীম আহসান বলেন, কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব দেশের জনস্বাস্থ্য ও সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য মারাত্বক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইজেনারেশন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, সরকারি-বেসরকারি খাত ও স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের পারস্পরিক সহযোগীতায় এবং প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে করোনা মোকাবেলা ও চলমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব।