ন্যাশনাল রোমিং যুগে বাংলাদেশ
ক.বি.ডেস্ক: ন্যাশনাল রোমিং যুগে বাংলাদেশ। রাষ্ট্রীয় মোবাইল অপারেটর টেলিটক এবং বেসরকারি মোবাইল অপারেটর বাংলালিংকের মধ্যে অ্যাক্টিভ শেয়ারিং পাইলটিং চালুর ফলে স্মার্ট সংযুক্তি সম্প্রসারণে আরও একটি মাইলফলক স্থাপন করলো বাংলাদেশ। ন্যাশনাল রোমিংয়ের এই উদ্যোগ বাংলাদেশের টেলিকম অপারেটরদের মধ্যে অবকাঠামো শেয়ারিংয়ের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।
এর মাধ্যমে টেলিটক সারাদেশে বাংলালিংকের ১৬,০০০ সাইট ব্যবহার করে নেটওয়ার্ক কাভারেজ সম্প্রসারণ করার সুযোগ পাবে। পাশাপাশি বাংলালিংকও টেলিটকের প্রায় ৬ হাজার টাওয়ার ব্যবহার করে লাভবান হবে। ন্যাশনাল রোমিংয়ের ফলে বাংলালিংক ও টেলিটক গ্রাহকরা কোনো স্থানে তাদের ব্যবহৃত নেটওয়ার্ক দুর্বল বা অনুপস্থিত হলে সেখানে অন্য অপারেটরের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারবেন।
এর মাধ্যমে তারা দেশের নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় নিরবচ্ছিন্নভাবে সেবার সুযোগ পাবেন। এর ফলে গ্রাহকরা দেশব্যাপী বিস্তৃত নেটওয়ার্ক কাভারেজের মাধ্যমে ভয়েস, এসএমএস ও ডেটা ব্যবহার করতে পারবেন। এই উদ্যোগটি বাংলাদেশের টেলিকম অপারেটরদের মধ্যে অবকাঠামো শেয়ারিংয়ের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।
আজ মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ঢাকায় আগারগাওয়ে আইসিটি টাওয়ারের বিসিসি মিলনায়তনে ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলালিংক ও টেলিটক এর মধ্যে ন্যাশনাল রোমিং পাইলটিংয়ের উদ্বোধন করা হয়। টেলিটক ও বাংলালিংকের মধ্যে ন্যাশনাল রোমিং পাইলটিংয়ের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, আইসিটি সচিব মো. সামসুল আরেফিন, বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানির সিইও ড. শাহজাহান মাহমুদ, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জি এস এম জাফর উল্লাহ, বাংলালিংকের সিইও এরিক অস এবং টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট সংযুক্তির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ন্যাশনাল রোমিং স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের অভিযাত্রায় একটি যুগান্তকারী উদ্ভাবনী পদক্ষেপ। এটি উভয় অপারেটরের জন্যই ইতিবাচক, কারণ এর মাধ্যমে তারা একে অপরের অবকাঠামো ব্যবহার করতে পারবে। একটি সুখি ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের ওপর দাঁড়িয়েও জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট জাতি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি ১৯৭৩ সালে আইটিইউ’র সদস্যপদ অর্জন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন, টিএন্ডটি বোর্ড গঠন, টেশিস ও ক্যাবল শিল্প প্রতিষ্ঠা এবং কারিগরি শিক্ষা প্রসারে উদ্যোগ গ্রহণসহ ড. কুদরত ই খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন করেন।”
তিনি আরও বলেন, “১৯৯২ সালে বিনামাশুলে সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে প্রযুক্তি দুনিয়া থেকে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করে। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩টি মোবাইল অপারেটরকে লাইসেন্স প্রদান এবং ভিস্যাটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশকে আইসিটি দুনিয়ায় সংযুক্ত করেন। স্মার্ট কানেক্টিভিটির সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অভিযাত্রা শুরু হয়েছে। টেলিটক ও বাংলালিংকের মধ্যে রোমিং চালুর বিষয়টি দেশের ডিজিটাল সংযুক্তির বিকাশে আরও একটি মাইলফলক। বাংলালিংক ও টেলিটকের মধ্যে এই কৌশলগত অংশীদারিত্ব দেশব্যাপী টেলিটক ও বাংলালিংক গ্রাহকদের মোবাইল সংযোগের পরিসর বৃদ্ধি করার পাশাপাশি অপারেটর দুইটির মধ্যে অবকাঠামো শেয়ারিংয়ে ভূমিকা রাখবে।”