দেশসেরা উদ্ভাবনের জন্য ৭ জনকে এটুআই’র অর্থায়ন
ক.বি.ডেস্ক: দেশের গৃহস্থালি এবং শিল্প-প্রতিষ্ঠানে পানি ব্যবহারের জন্য স্মার্ট মিটার ও সাব-মিটার তৈরি, গর্ভবর্তী নারীদের ডিজিটাল উপায়ে গর্ভাবস্থার গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক তথ্য পর্যবেক্ষণ এবং সরকারি অফিসের নথির জন্য কাস্টমাইজড পত্র তৈরির ক্ষেত্রে সাতটি উদ্ভাবনী আইডিয়া দিয়ে সেরা উদ্ভাবক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দেশের সাত উদ্ভাবক।
গত বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাজধানীর বিএএফ শাহীন হলে এটুআই আয়োজিত অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ‘ওয়াটার ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ-২০২১’, ‘প্রেগনেন্সি মনিটরিং ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২’ এবং ‘লেটার বিল্ডার ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২’-এর বিজয়ী উদ্ভাবকদের মাঝে সিডমানিসহ পুরস্কার তুলে দেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিজয়ী উদ্ভাবকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এটুআই’র প্রকল্প পরিচালক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমআরএএইউ’র উপাচার্য এয়ার ভাইস মার্শাল এ এস এম ফখরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান, এটুআই’র পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী এবং এটুআই ইনোভেশন ফান্ড প্রধান নাঈম আশরাফী।
উদ্ভাবক খালেদ আশরাফকে ডিজিটাল মাতৃত্ব প্রকল্পের জন্য ৯০ লাখ; মেহেদী হাসানকে মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহার প্রকল্পের জন্য ৬০ লাখ; হাসিব উদ্দীনকে সেন্টিনেল টেকনোলজিস প্রকল্পের জন্য ৩৩.২০ লাখ; আশিকুর রহমান তানিমকে ওয়াটার ওয়াইজ থিঙ্ক প্রকল্পের জন্য ১৮.৫০ লাখ; আহমেদ নাসিফ হোসাইন অয়নকে এডভান্সড মিটারিং সিস্টেম প্রকল্পের জন্য ২০ লাখ; মো. খালেদ হাসান মোর্শেদুল বারিকে ওয়াশ মেট্রিক প্রকল্পের জন্য ২৮.৩২ লাখ; এ এইচ এম রেজওয়ানুল ইসলামকে পানি-ধী প্রকল্পের জন্য ২৫ লাখ টাকার সিডমানি এবং সার্টিফিকেট তুলে দেয়া হয়।
আশিকুর রহমান তানিম -এর প্রস্তাবিত সমাধানটি বাসা-বাড়ির আইওটিভিত্তিক স্মার্ট মিটারিং ও সাব-মিটারিং ব্যবহার করে পানির গুণমান এবং কী পরিমাণ পানি ব্যবহার করা হয়েছে তা পর্যবেক্ষণ করবে এবং পানির অপচয় কমাতে মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স এবং ডাটা অ্যানালাইটিক্স ব্যবহার করে পানির সাশ্রয়ী ব্যবহার সম্পর্কে উৎসাহিত করার সুযোগ থাকবে এ উদ্ভাবনে।
আহমেদ নাসিফ হোসাইন অয়ন -এর প্রস্তাবিত সমাধানটির মাধ্যমে পানির স্মার্ট পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব এবং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে পানিসম্পদ বিতরণ করতে পারবে। এডভান্সড মিটারিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার (এএমআই) এর মাধমে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো রিমোটলি গ্রাহকের প্রকৃত সময়ে পানি ব্যবহারের তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে।
মো. খালেদ হাসান মোর্শেদুল বারি বস্ত্র ও চামড়া শিল্পের জন্য একটি ড্যাশবোর্ড তৈরি করবেন যার মাধ্যমে শিল্পক্ষেত্রে পানির ব্যবহার, পরিশোধন, পুনঃব্যবহার এবং অপচয়ের তথ্য চাহিদা অনুযায়ী পর্যবেক্ষণ করা যাবে।
এ এইচ এম রেজওয়ানুল ইসলাম পানির অপচয় রোধে ডিজিটাল মিটার এবং শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য ওয়াটার টুল অ্যানালিটিক্স প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবেন৷ তার প্রস্তাবিত টুলটি শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের পানি ব্যবহারের পরিমাণ দূরবর্তীভাবে পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হবে। টুলটিতে থাকবে প্রিপেইড এবং পোস্টপেইড বিলিং ব্যবস্থা, কি পরিমাণ পানি ব্যবহার করা হচ্ছে তার প্রকৃত সময়ে বিশ্লেষণ, প্রতিটি শিল্প-কারখানাতে কি পরিমাণ পানি ব্যবহার হচ্ছে তা তুলনা করা সহজতর করবে।
খালিদ আশরাফ তার উদ্ভাবনের মাধ্যমে গর্ভাবস্থা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন ড্যাশবোর্ড ও ডেটা আইল্যান্ডগুলোকে সংযুক্ত করবেন, যার মাধ্যমে ডাক্তার এবং রোগীদের মাঝে দ্বিমুখী সংযোগ স্থাপন হবে।
মেহেদী হাসান একটি ডিজিটাল মাধ্যম তৈরি করবেন, যার মাধ্যমে গর্ভাবস্থার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণসমূহ পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং স্মার্ট ওয়াচের মাধ্যমে এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পর্যবেক্ষণ করে স্বাস্থ্যসুবিধা প্রদানকারীর কাছে সচেতনতামূলক বার্তা পাঠাবে।
হাসিব উদ্দীন একটি ওয়েবভিত্তিক ডায়নামিক কম্পোনেন্ট লেটার বিল্ডার তৈরি করবেন, যা সরকারি অফিসগুলো ব্যবহার করবেন। টেমপ্লেটগুলো পুনঃব্যবহারযোগ্য হবে এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সিস্টেম যেমন: নথি, জাতীয় তথ্য বাতায়ন, মাইগভ, ইত্যাদির সাথে ইন্টিগ্রেট করা যাবে।