দীর্ঘ লাইনের ভোগান্তি এড়াতে মেট্রোরেলে এমআরটি পাস
মেট্রোরেল স্টেশনের কাউন্টারে দীর্ঘ লাইনের ভোগান্তি এড়াতে চালু করা হয়েছে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) বা এমআরটি পাস। যারা মেট্রোরেলে যাতায়াতের জন্য বারবার টিকিট কাটতে চান না, তাদের জন্য এই এমআরটি পাস। টিকিট কাটার সময় অনেক ভিড় থাকে, এই সুবিধা টিকিট কাটায় ঝামেলা থাকে না। এমআরটি পাস থাকায় দ্রুত ট্রেনে উঠতে পারছেন যাত্রীরা। এমআরটি পাসে রয়েছে দুই টাকা করে কম ভাড়ার সুবিধা।
রাজধানীকে যানজটমুক্ত করতে দিন দিন বাড়ছে মেট্রোরেলের গুরুত্ব। উদ্বোধনের পর থেকেই বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে মেট্রোরেল। বিশেষ করে উত্তরা থেকে মতিঝিলগামী যাত্রীরাই এর সুবিধা পাচ্ছেন বেশি। পাশাপাশি জনপ্রিয়ও হচ্ছে মেট্রোরেলের এমআরটি পাস। শুরুর পর এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ শতাংশ যাত্রী মেট্রোরেলে এই কার্ড ব্যবহার করছেন। আবার মোট ভাড়ায় ১০ শতাংশ কমিশন থাকায় যাত্রীরাও খুশি।
মেট্রোরেলে ভ্রমণের জন্য দুই ধরনের টিকিট আছে। মেট্রোরেলে কোনো কাগুজে টিকিট নেই। যাত্রীরা যেটি পান, সেটি একটি কার্ড। কার্ড দুই ধরনের- একটি স্থায়ী অন্যটি এক যাত্রার। এক যাত্রার কার্ড ভ্রমণ শেষে স্টেশনে জমা দিয়ে যেতে হয়। স্থায়ী কার্ড যাত্রীর কাছে থাকে।
জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ৫০০ টাকায় কেনা যায় এমআরটি কার্ড। এর মধ্যে ২০০ টাকা জামানত, বাকি ৩০০ টাকা ভাড়া হিসেবে ব্যবহার হয়। ১০ বছর মেয়াদী এই টিকিট ব্যবহারেও আছে ১০ শতাংশ ছাড়।
মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিনা টিকিটে ভ্রমণ সুবিধা রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিরা মেট্রোরেলে পাচ্ছেন ১৫ শতাংশ ছাড়।
এই কার্ডে ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনমতো টাকা রিচার্জ করলেই হয়। কেউ কার্ড ফেরত দিলে জামানত ফেরত পাবেন। হারিয়ে ফেললে টাকা দিয়ে নতুন করে কার্ড কিনতে হয়। পুরোনো কার্ডে টাকা থাকলে তা অবশ্য নতুন কার্ডে যুক্ত হবে।
ভিড় এড়াতে এই কার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। ৩০ শতাংশ যাত্রী এমআরটি পাস কিনেছেন। তবে খুব শিগগিরই মোবাইল অ্যাপসেও এই সুবিধা রাখা হবে। এনএফসি সুবিধা আছে এমন মোবাইল ফোন দিয়ে সহজে এমআরটি পাস ও র্যাপিড পাস ব্যবহার করতে পারবেন যাত্রীরা।
মেট্রোরেলের স্বত্বাধিকারী শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড সূত্রে জানা যায়, এমআরটি কার্ড নিতে লাগবে মাত্র ৫০০ টাকা। এরমধ্যে ২০০ টাকা কার্ডের জামানত। বাকি ৩০০ টাকা ব্যালেন্স, যা দিয়ে ট্রেনে চড়া যাবে। জামানতের ২০০ টাকা কার্ড জমা দিলেই ফেরত পাওয়া যাবে।
কার্ড করতে প্রথমে ডিএমটিসিএল-এর ওয়েবসাইট (dmtcl.gov.bd) থেকে একটি ফরম ডাউনলোড করতে হবে। সেটি পূরণ করে মেট্রোরেলের টিকিট কাউন্টারে জমা দিলেই পাওয়া যাবে এই কার্ড। আপাতত বেলা ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এমআরটি পাস দেয়া হচ্ছে। কার্ডে টাকা রিচার্জ করা যাবে টিকিট কাউন্টার থেকে। এ ছাড়া টিকিট বিক্রির মেশিনে টপ আপ অপশনে গিয়েও রিচার্জ করা যাবে।
স্থায়ী কার্ড কেনার আগে নিবন্ধন করতে হবে। এর জন্য নিজের নাম, পিতা-মাতার নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) লাগবে। পাসপোর্টের নম্বর হলেও চলবে। এসব তথ্য জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্যভান্ডারের সঙ্গে মিলতে হবে।