ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির একাদশ সমাবর্তন
ক.বি.ডেস্ক: বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) একাদশ সমাবর্তন বিরুলিয়ায় ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। এবারের সমাবর্তনে ৬২৮৪ জন গ্র্যাজুয়েটকে ডিগ্রী প্রদান করা হয়। কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী ১২ জন গ্র্যাজুয়েটকে চ্যান্সেলর, চেয়ারম্যান ও উপাচার্যসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ‘স্বর্ণপদক’ প্রদান করা হয়।
গতকাল রবিবার (১০ মার্চ) অনুষ্ঠিত ডিআইইউ’র একাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন আমেরিকার জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. ফ্রাঙ্কো গান্ডোলিফ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিআইইউ’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলমগীর, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম লুৎফর রহমান। ভ্যালিডেকটোরিয়ান বক্তব্য প্রদান করেন সাংবাদিকতা বিভাগের গ্র্যাজুয়েট মো. মেহরাবুল হক।
ডিআইইউ’র একাদশ সমাবর্তনে চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তরা হলেন কমপিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কাওসার হোসেন ও সুমাইয়া আকতার সাম্মী, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের জানানতুল ফেরদৌস মিম, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের নাদিম খান শান্ত এবং কমপিউটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের মো. মাহামুদুল হাসান সুমন।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট সিটিজেন এবং স্মার্ট জেনারেশন তৈরী করতে হবে এবং শুধু স্মার্টফোন হাতে নিলেই স্মার্ট জেনারশন হবে না। তাকে মন মানসিকতায় স্মার্ট হওয়ার জন্য গ্লোবাল সিটিজেন হতে হবে। গ্লোবাল সিটিজেন হতে হলে ভেল্যু সিস্টেমের জায়গায় টলারেন্সের ন্যায় একটা মানসিকতা থাকতে হবে। তাকে নন কমিউনাল মানুষ হতে হবে। তার অন্য ধর্ম, সম্প্রদায় ও সংস্কৃতির প্রতি বিদ্বেষপূর্ন মনোভাব থাকতে পারবে না। তাকে সহনশীল হতে হবে। পাশাপাশি দক্ষতার জায়গায় তাকে আজীবন ‘লাইফ লং লারনার’ হওয়ার একটা মানসিকতা অবশ্যই ধারন করতে হবে। তাহলেই সে স্মার্ট মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারবে এবং সেই স্মার্ট মানুষদেরকে নিয়েই আগামীতে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক নানা মানের কোয়ালিফিকেশন্স এবং প্রফেশনাল সার্টিফিকেশন্সের ক্ষেত্রে আমরা এখনও প্রতিবেশী অনেক দেশের তুলনায় পিছিয়ে আছি। তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে আমরা আমাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা, দক্ষতা কাজে লাগিয়ে সেগুলো অর্জন করতে পারি। আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আইসিটির একটা ইফ্রাস্ট্রাকচারও আছে, সেগুলোকে ব্যবহার করে আমরা দেশে বসেই অনেক ধরনের প্রশিক্ষণ এবং সার্টিফিকেশন নেয়ার সুয়োগ রয়েছে। সারা বিশ্বে প্রফেশনালদের একটা ঘাটতি শুরু হয়েছে এবং আগামী ২০৫০ সালে এই ঘাটতি প্রায় ৩০ মিলিয়নে গিয়ে দাড়াবে। ফলে আমাদের জন্য বিশাল সুয়োগ সুষ্টির সম্ভাবনা তৈরী হচ্ছে। নতুন যে শিক্ষা কারিকুলাম আসছে সেখানে আমরা অভিজ্ঞতা নির্ভর শিক্ষা এবং জীবন ঘণিষ্ঠ শিক্ষার ওপর জোড় দিচ্ছি।’’
ড. মো. সবুর খান বলেন, ‘‘ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি শিক্ষা ব্যবস্থায় উদ্ভাবনকে অনুঘটক মনে করেছে এবং এর একাডেমিক সিস্টেমের সম্পূর্ণ ডিজিটাল রূপান্তর নিশ্চিত করেছে। আমরা আধুনিক ফ্ল্যাগশিপ ইউনিভার্সিডঁ হিসেবে বিকাশের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি, অ্যাক্সেস এবং ইক্যুইটির প্রতি নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে এবং উল্লেখযোগ্যভাবে শিক্ষাদান, শেখার, গবেষণার মান এবং জাতীয় ও আঞ্চলিক আর্থ-সামাজিক চাহিদা মেটাতে কাজ করে যাচ্ছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এই বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে প্রথম ও একমাত্র উদ্ভাবনী বিষয়ক কোর্স চালু করেছে, একাডেমিয়া–শিল্প সম্পর্ক জোরদার করেছে, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত করেছে, শিক্ষা ব্যবস্থায় উদ্ভাবন এবং সৃজনশীলতাকে একীভূত করেছে, পাঠ্য বহির্ভূত কার্যক্রমের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। একটি জেড জেনারেশনের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সহায়তামূলক পরিষেবা এবং সুবিধাগুলোতে অ্যাক্সেস নিশ্চিত করে আমরা একটি ব্যাপক শিক্ষামূলক ইকো সিস্টেম তৈরি করার চেষ্টা করেছি।’’