ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন, পরিবর্তন ও প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত
ক.বি.ডেস্ক: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন, পরিবর্তন ও প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ। এই আইনটি সংশোধন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ হিসেবে চালু করা হবে। আজ সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিপরিষদের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।
সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছিল আইসিটি বিভাগ থেকে। এটি আজ উপস্থাপিত হয়েছে মন্ত্রিসভায়। আলোচনার মাধ্যমে লেজিসলেটিভ (আইনপ্রণয়ন) বিভাগের ভেটিং সাপেক্ষে নীতিগত অনুমোদন করা হয়েছে। লেজিসলেটিভ বিভাগ ভেটিং করে তারপর তারা চুড়ান্ত করে দেবে।
আজ সোমবার (৭ আগস্ট) মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অনেকগুলো ধারা পরিবর্তন করে নতুন আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। নতুন আইন পাস হলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকার মনে করেছে সাইবার অপরাধ অনেক হচ্ছে। তাই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অনেকগুলো ধারাকে সংযুক্ত করে নতুন আইনটি করা হয়েছে। এটিতে আগের আইনের পরিবর্তন হয়েছে। নতুন আইন অনুযায়ী একটি সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি থাকবে। সাজার ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনে জেলের ওপরে ফোকাসটা বেশি ছিল। এখানে এসে জেলের সাজার পরিমাণটা কমানো হয়েছে কিন্তু আর্থিক জরিমানার অংশ রাখা হয়েছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আর্থিক জরিমানা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মো. মাহবুব হোসেন জানান, আইসিটি সংক্রান্ত বিশ্বের যে ব্যাপ্তি কিংবা ধরন, বেশ পরিবর্তন এসেছে। সেসব কিছুকে বিবেচনায় রেখে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এ আইন কার্যকর করার সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত হয়ে যাবে। একটা আইন করা হয়েছে। সেটা প্রয়োগ করা হয়েছে। এখন সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দেশ ও আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়ায় যে বাস্তবতা তৈরি হয়েছে, সেজন্য সরকার মনে করছে সাইবার নিরাপত্তার জন্য একটা আইন দরকার। সে আইন করতে গিয়ে আগের আইন থেকে কিছু ধারা, কিছু বিষয় এখানে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ আইনের আওতায় একটি এজেন্সি থাকবে, নাম হবে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি। সাইবার সংক্রান্ত কিছু অপরাধকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সেই অপরাধের জন্য শাস্তির মাত্রা ঠিক করা হয়েছে। আগের আইনের কাঠামোতে মূলত জামিন অযোগ্য ধারা অনেক বেশি ছিল। এখানে এসে বেশিরভাগকে জামিনযোগ্য করা হয়েছে। আগে ছিল ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি। নতুন সংস্থা হবে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি। এটার ক্ষমতা ও দায়িত্ব বিধির মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।
মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে ১২ ডিসেম্বরকে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসের পরিবর্তে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস’ হিসেবে পালনের অনুমোদন দিয়েছে। বিগত সময়ে ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস পালন করা হয় । ইতোমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারনা থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ এর অভিযাত্রা শুরু হয়েছে। সে প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে আইসিটি বিভাগ থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে, ১২ ডিসেম্বর যে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস পালন করা হচ্ছে, সেই নাম পরিবর্তন করে ১২ ডিসেম্বর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস’ উদযাপন করার। মন্ত্রিসভা সেটি অনুমোদন দিয়েছে।