সাম্প্রতিক সংবাদ

উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৫’

ভূঁইয়া মোহাম্মদ ইমরাদ: উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো আইসিটি খাতের অন্যতম বৃহৎ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বহুমাত্রিক আয়োজন ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৫’। ‘বিপিও ২.০: রেভ্যুলেশন টু ইনোভেশন’ স্লোগানে দুই দিনব্যাপি (২১-২২ জুন) ঢাকার ক্যান্টনমেন্টের সেনাপ্রাঙ্গণে এবারের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বিপিও খাতের রূপান্তরের পাশাপাশি উদ্ভাবনের গতিপথকে তুলে ধরা হয়। এই আয়োজনে দেশি-বিদেশি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, নীতিনির্ধারক, তরুণ পেশাজীবী এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সরব উপস্থিতি সম্মেলনকে একটি বিশ্বমানের প্ল্যাটফর্মে পরিণত করে।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্ট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো), আইসিটি অধিদপ্তর এবং বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (বিপিসি)-এর যৌথ উদ্যোগে ষষ্ঠবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় দেশের বিপিও শিল্পের শীর্ষ সম্মেলন ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৫’। সম্মেলনের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং সহযোগী ছিলো বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ) ও টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশ (টিএমজিবি)।

গতকাল রবিবার (২২ জুন) ঢাকার ক্যান্টনমেন্টের সেনাপ্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৫’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব (পূর্ব) ড. মু. নজরুল ইসলাম, আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবু সাঈদ। সভাপতিত্ব করেন আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাক্কো’র সভাপতি তানভীর ইব্রাহীম এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাক্কো’র সাধারণ সম্পাদক ফয়সল আলিম।

বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৫-এ ৩০টিরও অধিক দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইটিইএস/বিপিও প্রতিষ্ঠান তাদের সেবা ও পণ্য প্রদর্শন করে। বিপিও খাতের সামগ্রিক অগ্রগতি, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আয়োজন করা হয় ৯টি বিষয়ভিত্তিক সেমিনার ও কর্মশালা, যেখানে ৮৬ জন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞগণ, কর্পোরেট নেতৃবৃন্দ ও সরকারের উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিবৃন্দ বক্তা হিসেবে অংশ নেন। সাইবার নিরাপত্তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থান, দক্ষতা উন্নয়ন ও আইটি পলিসি সংক্রান্ত নানা বিষয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনায় ওঠে আসে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার রূপরেখা।

শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, “বিপিও শিল্পের অগ্রযাত্রা আমাদের প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ হয়ে ওঠছে। এই খাতের বিকাশে সরকার ও শিল্পখাতের সমন্বিত প্রচেষ্টা আরও জোরদার হবে। তরুণদের তথ্যপ্রযুক্তি জগতে যুক্ত করতে হলে তাঁদের হাতে সঠিক দিকনির্দেশনা ও প্রশিক্ষণ পৌঁছে দিতে হবে। বিপিও সামিট সে সুযোগটিই তৈরি করে দিয়েছে, যেখানে আমাদের আগামী প্রজন্ম প্রযুক্তিনির্ভর রপ্তানি আয় তৈরির সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে পারবে।”

তানভীর ইব্রাহীম বলেন, “বাক্কো বর্তমানে ৪৩০-এর অধিক সদস্য নিয়ে দেশের বিপিও শিল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এ পর্যন্ত আমরা ৮৫,০০০-এর বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছি এবং বার্ষিক ৮৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি রাজস্ব অর্জন করছি। আমাদের লক্ষ্য হলো ২০৩০ সালের মধ্যে ৩ লক্ষ টেকসই কর্মসংস্থান ও ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় নিশ্চিত করা, যা অর্জনে বাক্কো তার বলিষ্ঠ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখছে। এই সম্মেলন আমাদের সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর অন্যতম মাইলফলক।”

ফয়সল আলিম বলেন, “এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সবাই আমাদের একটি শক্তিশালী কমিউনিটি গড়ে তোলার পথ দেখিয়েছে। তরুণদের জন্য বিপিও এখন শুধু একটি চাকরি নয়, বরং একটি ক্যারিয়ার। বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা বৈশ্বিক আউটসোর্সিং ইকোসিস্টেমে অন্যতম শক্তি। তাঁদের সমস্যা ও সম্ভাবনা তুলে ধরতে আমরা বিশেষ সেশন করেছি। ভবিষ্যতে বাক্কো ফ্রিল্যান্সারদের উন্নয়নে সরকার ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে মিলে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।”

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *