স্বাক্ষাতকার

উদ্যোক্তা থেকে একজন দূরদর্শী রূপান্তরকারী বা চেঞ্জ মেকার

বাংলাদেশ এর ই-কমার্স খাতের রূপান্তরের ইতিহাসে কিছু নাম কেবল উদ্যোক্তা হিসেবেই নয়, বরং একজন দূরদর্শী রূপান্তরকারী বা চেঞ্জ মেকার হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক মৃধা, যিনি সোহেল মৃধা নামেই সমধিক পরিচিত, তাদের মধ্যে অন্যতম। তার কর্মজীবন, যা শুরু হয়েছিল একটি সুনির্দিষ্ট পেশাগত দক্ষতার মধ্য দিয়ে। আজ বিস্তৃত হয়েছে নীতি-নির্ধারণী পর্যায়, কমিউনিটি গঠন এবং সামগ্রিক ইকোসিস্টেমের উন্নয়নে। তিনি কেবল একজন ব্যবসায়ী নন, বরং একটি নতুন খাতের জন্ম ও বিকাশে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখা একজন অগ্রদূত। তার পৈতৃক নিবাস গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নে।

কমপিউটার বিচিত্রার সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে বাংলাদেশ এর ই-কমার্স খাতের সম্ভাবনা, ই-ক্যাব নিয়ে প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা, বিশ্বব্যাপী ই-কমার্স খাতের অবস্থা, ই-কমার্সে ক্রেতা সুরক্ষা নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন ই-ক্যাব এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও কিনলে ডটকম এর প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক মৃধা (সোহেল মৃধা)। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন- ভূঁইয়া মোহাম্মদ ইমরাদ (তুষার),,,

কমপিউটার বিচিত্রা: ডিজিটাল জগতে প্রবেশের আগে আপনার পেশাগত ভিত্তি কি ছিল?

সোহেল মৃধা: পেশাগত জীবনের শুরু ২০০০ সালে, আমি একটি স্বনামধন্য বীমা প্রতিষ্ঠানে মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ হিসেবে কর্মময় জীবন শুরু করি। এরপর একটি সুইডিশ বায়ারের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে আরএমজি (পোশাক) খাতে প্রবেশ করি। সেখানে নিট, ওভেন ও সোয়েটার পণ্যের স্যাম্পলিং থেকে শুরু করে অর্ডার প্লেসমেন্ট, ইনস্পেকশন এবং শিপমেন্ট পর্যন্ত সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া তদারকি করার কাজ করি। বাংলাদেশের বিভিন্ন সুপরিচিত গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, যেমন- নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মিরপুর, সাভার এবং চট্টগ্রামের কারখানা থেকে আমি বায়ারের অর্ডারগুলো এক্সিকিউট করেছি। ২০০৯ সালে নিজেই বায়িং হাউস ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করি।

ক.বি: ই-কমার্স খাতে আপনার প্রথম পদক্ষেপ এবং উদ্যোগ কী ছিল?

সোহেল মৃধা: এই সুপ্রতিষ্ঠিত পেশাগত পটভূমিই আমাকে দেশের ই-কমার্স খাতে আসতে অনুপ্রাণিত করে। ২০১৪ সালে ‘কিনলে ডটকম’ প্রতিষ্ঠা করি। সেই সময়ে বাংলাদেশে অনলাইন লেনদেন, লজিস্টিকস এবং গ্রাহক আস্থার অভাব ছিল প্রকট। কিনলে ডটকম সেইসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে একটি পূর্ণাঙ্গ ই-কমার্স ইকোসিস্টেম তৈরির সাহসী প্রচেষ্টা হিসেবে চিহ্নিত।

ক্রেতা সুরক্ষার জন্য ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা ২০২০ এবং এসক্রো পদ্ধতি কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা জরুরি

ক.বি: ই-কমার্স ছাড়াও অন্যান্য ব্যবসায়িক বা সাংগঠনিক উদ্যোগ কী কী?

সোহেল মৃধা: ২০০৯ সালে গার্মেন্টস এক্সেসরিজ সরবরাহকারী হিসেবে এসআরএম ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি প্রতিষ্ঠান শুরু করি, যেখানে বায়ারের অর্ডারগুলোতে নিজের প্রতিষ্ঠান থেকেই লেবেল সহ অন্যান্য এক্সেসরিজ সরবরাহ করি। ২০১২ সালে নাগরি ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট নামে একটি রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান চালু করি। ২০১৬ সালে ‘কিনলে জবস’ নামে একটি জব সাইট চালু করি, বর্তমানে যা ‘ই-জবস ওয়ান’ নামে চলমান আছে।

২০১৮ সাল থেকে নাগরী টুরিস্টা নামে লোকাল টুরিজম নিয়ে কাজ শুরু করি এবং ২০২০ সালে স্কলারস এডুকেশন সার্ভিস নামে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য আগ্রহী শিক্ষার্থীদের সহায়তাকারী একটি উদ্যোগ গ্রহণ করি। এর বাইরে, প্রাথমিক সাংগঠনিক দক্ষতা হিসেবে ১৯৯৪ সালে বন্ধুদের নিয়ে ইউনিটি কো-অপারেটিভ সোসাইটি নামে একটি সমবায় সমিতি চালু করি।

ক.বি: নীতি-নির্ধারণ এবং ই-ক্যাব-এ আপনার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান কী?

সোহেল মৃধা: আমি ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং নীতি-নির্ধারকের ভূমিকায় কার্যকর ভূমিকা পালন করছি। আমার নিরলস চেষ্টা ও লাগাতার লেখালেখি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও অংশীজনের কাছে আবেদনের ফলেই ২০২২ সালে ই-ক্যাবে প্রথম প্রত্যক্ষ ভোটের নির্বাচন সম্ভব হয়। এই প্রচেষ্টারই ফলস্বরূপ নির্বাচনের নমিনেশন ফি ৭৫ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকায় নেমে আসে। ২০২২ সালে একটি প্যানেলের হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি এবং আনুমানিক ৪৬ শতাংশ ভোট পেয়েও হেরে যাই। পরবর্তীতে ২০২৪ সালে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি, কিন্তু নির্বাচন স্থগিত বা বাতিল হওয়ায় সে নির্বাচন আর হয়নি।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক মৃধা (সোহেল মৃধা)

ক.বি: সরকারি পর্যায়ে আপনি কীভাবে ই-কমার্স খাতে প্রতিনিধিত্ব করেছেন?

সোহেল মৃধা: আমি শুধু নিজের ব্যবসা নিয়েই কাজ করিনি, বরং পুরও খাতের উন্নয়নের জন্য কাজ করছি। গত এক বছরে (বর্তমান) ই-ক্যাব এর প্রশাসককে নানা বিষয়ে পরামর্শ, তথ্য উপাত্ত এবং যুক্তি দিয়ে ই-ক্যাবকে সঠিক অবস্থায় ধরে রাখার জন্য চেষ্টা করছি। আইসিটি মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে উদ্যোক্তা উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছি এবং ই-কমার্সের স্বার্থ রক্ষায় ২০২৫ সালের বাজেট প্রস্তাবনা সহ সরকারের কাছে বিভিন্ন আবেদন করেছি। বিশেষ করে, ভ্যাট ও ট্যাক্স কমানোর বিষয়ে আমি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর সঙ্গেও যোগাযোগ করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেছি।

ক.বি: উদ্যোক্তাদের ফান্ডিং এবং বিরোধ নিষ্পত্তিতে আপনার ভূমিকা?

সোহেল মৃধা: আমি বিভিন্ন ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের জন্য ফান্ডিং সম্পর্কিত তথ্য প্রদান করি এবং যারা ভালো প্রকল্পে অর্থায়ন করেন, এমন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকার কারণে অনেক উদ্যোক্তাই সফলভাবে ফান্ডিং পেতে সক্ষম হন। বিশ্বাসযোগ্যতার কারণেই ২০২২ সাল থেকে আমি ডিসপুট ম্যানেজমেন্ট (Dispute Management) বা ব্যবসায়িক বিরোধ নিষ্পত্তির কাজে সক্রিয়ভাবে যুক্ত আছি। কয়েক কোটি টাকার আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিল সমস্যাগুলোতে আমি একজন তৃতীয় পক্ষ হিসেবে সমাধান দেয়ার চেষ্টা করেছি।

দেশের ৮০ শতাংশ এরও বেশি লেনদেন এখনো ক্যাশ অন ডেলিভারি (CoD) নির্ভর

ক.বি: ই-কমার্স গবেষণা ও অ্যাডভোকেসির জন্য আপনার বিশেষ প্রতিষ্ঠান কোনটি?

সোহেল মৃধা: আমি ‘সেন্টার ফর ডিজিটাল কমার্স রিসার্চ অ্যান্ড এডভোকেসি (CDCR&A)’ নামক একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ম্যানেজিং পার্টনার। এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের প্রথম প্রতিষ্ঠান, যা ই-কমার্স সংক্রান্ত রিসার্চ, কনসালটেন্সি এবং অ্যাডভোকেসি প্রদান করে, যা জ্ঞানের গভীরতা ও এই খাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমার দূরদর্শিতার প্রমাণ দেয়।

ক.বি: বাংলাদেশ এর সামগ্রীক ই-কমার্স খাত নিয়ে আপনার ভাবনা

সোহেল মৃধা: বাংলাদেশ এর ই-কমার্স খাতের সম্ভাবনা বিশাল এবং বর্তমানে এর বাজার মূল্য প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি, যা বার্ষিক ২৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমার মতে, খাতটি এখন চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করছে। যদিও সম্ভাবনা প্রচুর, তবে দেশের ৮০ শতাংশ এরও বেশি লেনদেন এখনো ক্যাশ অন ডেলিভারি (CoD) নির্ভর, যা ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে গ্রাহক আস্থা বাড়াতে সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তাকে নির্দেশ করে। সঠিক নীতি সহায়তা, অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করে গ্রামীণ অর্থনীতিতে ডিজিটাল কমার্সের সুবিধা পৌঁছে দিতে পারলে এটি ২০৪১ সালের মধ্যে দেশের অর্থনীতিতে অন্যতম চালিকা শক্তি হবে।

ক.বি: ই-ক্যাব নিয়ে আপনার প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা

সোহেল মৃধা: ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) নিয়ে আমার বড় প্রাপ্তি হলো খাতটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পেয়েছে এবং আমার ব্যক্তিগত চেষ্টার ফলস্বরূপ গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচনের প্রবর্তন সম্ভব হয়েছে। ই-ক্যাবকে এখন কেবলমাত্র একটি ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন হিসেবে নয়, বরং ২৯০০এরও বেশি সদস্যের স্বার্থ রক্ষায় একটি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী এবং শক্তিশালী স্ব-নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কাজ করা উচিত। দ্রুত নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া এবং নির্বাচিত নেতৃত্বের মাধ্যমে সংগঠনের বাজেটকে সদস্যদের সেবার জন্য আরও কার্যকর করা- এটাই আমার প্রধান প্রত্যাশা।

ই-ক্যাবকে কেবলমাত্র একটি ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন হিসেবে নয়, বরং ২৯০০এরও বেশি সদস্যের স্বার্থ রক্ষায় একটি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী এবং শক্তিশালী স্ব-নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কাজ করা উচিত

ক.বি: ই-কমার্সে ক্রেতা সুরক্ষা বা প্রতারণার হাত থেকে বাঁচার উপায়

সোহেল মৃধা: ক্রেতা সুরক্ষার জন্য ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা ২০২০ এবং এসক্রো পদ্ধতি কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা জরুরি। মূল উপায়গুলো হলো- সরকারকে প্রতারণাবিরোধী একটি কেন্দ্রীয় মনিটরিং ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে, যা দ্রুত অভিযোগ নিষ্পত্তি করবে এবং ৩০ দিনের মধ্যে সমাধান নিশ্চিত করার একটি সময়সীমা নির্ধারণ করতে হবে। বড় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোকে অবশ্যই তাদের বিক্রেতাদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া গ্রাহকদের যাচাই করা রিভিউ দেখা, বিক্রেতার গ্রহণযোগ্যতা পরীক্ষা করা এবং প্রয়োজনে ক্যাশ-অন-ডেলিভারি পদ্ধতি বেছে নেয়া উচিত। আমার মতে, আইনি কাঠামোর কঠোর প্রয়োগই প্রতারণা রোধে প্রধান উপায়।

ক.বি: বিশ্বব্যাপি ই-কমার্স খাতের সামগ্রীক চিত্র কেমন

সোহেল মৃধা: বিশ্বব্যাপী ই-কমার্স খাত বর্তমানে ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে এবং দ্রুত প্রবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই বাজারের ৭০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ লেনদেনই হচ্ছে মোবাইল কমার্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে। ক্রস-বর্ডার ই-কমার্স বা আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে। বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতা করতে হলে বাংলাদেশের জন্য ক্রস-বর্ডার ই-কমার্সে গুরুত্ব দেয়া অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য বৈদেশিক মুদ্রা নীতি এবং আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ের সঙ্গে সংযুক্তির প্রক্রিয়াকে আরও সরল ও দ্রুত করতে হবে, যাতে দেশীয় উদ্যোক্তারা সহজে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করতে পারে।

ক.বি: আন্তর্জাতিক ও দেশীয় গণমাধ্যমে আপনার কোনও লেখা প্রকাশিত হয়েছে?

সোহেল মৃধা: আমি একজন উপস্থাপক এবং বিনিয়োগকারী হিসেবে পরিচিত। ই-কমার্স ও ডিজিটাল অর্থনীতি বিষয়ক বিশ্লেষণধর্মী লেখাগুলো কমপিউটার বিচিত্রা (নিয়মিত লেখক), সারা বাংলা ডট নেট, দৈনিক রুপালী বাংলাদেশ, দৈনিক সমকাল, দৈনিক জনকণ্ঠ, দৈনিক নয়া দিগন্ত, বিজনেস টুডে, দ্য ডেইলি সান সহ অসংখ্য প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। বেসরকারি টেলিভিশন নিউজ২৪, এখন টেলিভিশন, বৈশাখী টেলিভিশন, বাংলাভিশন, আল জাজিরা সহ অন্যান্য মিডিয়ায় স্বাক্ষাতকার প্রচারিত হয়। আমার ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট হলো- shohelmridha.com।

ক্রস-বর্ডার ই-কমার্স বা আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে। বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতা করতে হলে বাংলাদেশের জন্য ক্রস-বর্ডার ই-কমার্সে গুরুত্ব দেয়া অত্যন্ত জরুরি

ক.বি: পেশাদারিত্বের বাইরে আপনার সামাজিক দায়বদ্ধতা কী?

সোহেল মৃধা: পেশাগত কাজের পাশাপাশি আমি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করি। ‘ব্লাডম্যান’ এবং ‘গ্রীন বাংলাদেশ’-এর মতো দুটি স্বনামধন্য সামাজিক সংগঠনের উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত আছি যা সমাজের প্রতি আমার গভীর দায়বদ্ধতা রয়েছে।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক মৃধার সামগ্রিক কর্মজীবনের বিশ্লেষণ থেকে এটি স্পষ্ট যে, তিনি কেবল একজন উদ্যোক্তা নন, বরং একজন ‘বহুমুখী রূপান্তরকারী’। তার এই রূপান্তরের প্রচেষ্টাটি চারটি প্রধান স্তরে পরিচালিত হয়েছে-
ব্যবসার রূপান্তর: তিনি দীর্ঘদিনের পেশাগত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন বাণিজ্যিক উদ্যোগ স্থাপন করেছেন।
প্রতিষ্ঠান ও নীতিমালার রূপান্তর: তিনি ই-ক্যাবের মতো সংগঠন প্রতিষ্ঠা এবং সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি তৈরি করেছেন।
কমিউনিটির রূপান্তর: বিভিন্ন গেট টুগেদার এবং সদস্যপদ গ্রহণের মাধ্যমে তিনি পেশাগত সম্পর্কের বাইরে গিয়ে ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও সহযোগিতার সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করেছেন এবং একজন নির্ভরযোগ্য বিরোধ নিষ্পত্তিকারী হিসেবে কাজ করেছেন।
জ্ঞানের রূপান্তর: তিনি তার লেখালেখি ও আলোচনার মাধ্যমে ই-কমার্স খাতের বুদ্ধিবৃত্তিক দিককে সমৃদ্ধ করেছেন।

ক.বি: ধন্যবাদ সোহেল মৃধা ভাই সময় দেয়ার জন্য।

সোহেল মৃধা: ধন্যবাদ ইমরাদ তুষার ভাই এবং কমপিউটার বিচিত্রাকে। কমপিউটার বিচিত্রার মাধ্যমে পাঠকদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *