সাম্প্রতিক সংবাদ

আঞ্চলিক আইএসপি বাঁচাতে সরকারের কঠোর অবস্থান

ক.বি.ডেস্ক: বাংলাদেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ক্ষুদ্র ও আঞ্চলিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো (আইএসপি) ক্রমবর্ধমান সংকটে পড়েছে। অভিযোগ ওঠেছে, কিছু প্রভাবশালী বড় আইএসপি বা গোষ্ঠী নিয়মিতভাবে ছোট অপারেটরদের নেটওয়ার্কে ডিডস (DDoS) আক্রমণ চালাচ্ছে, যার ফলে এসব স্থানীয় প্রতিষ্ঠান ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেবা বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে।

পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এসব আক্রমণের লোড অনেক সময় ৫০০ থেকে ৭০০ গিগাবিট পর্যন্ত হয়ে থাকে, যা ক্ষুদ্র আইএসপিদের পক্ষে সামাল দেয়া প্রায় কার্যত অসম্ভব। এর ফলে ছোট আইএসপিরা গ্রাহক হারাচ্ছে, আর বড় প্রতিষ্ঠানগুলো অন্যায্যভাবে বাজার দখলের সুযোগ নিচ্ছে। এ ছাড়া, কিছু ন্যাশনাল আইএসপি নতুন টেলিকম নীতিমালার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ছোট অপারেটরদের ভয় দেখাচ্ছে, যে তাদের লাইসেন্স বাতিল হতে পারে বা একীভূত হতে হবে। তবে সরকার এই ধরনের প্রচেষ্টা ‘অপরাধ হিসেবে গণ্য’ করেছে।

গতকাল শুক্রবার (৭ নভেম্বর) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সরকারের পদক্ষেপ
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসি যৌথভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় এসব সাইবার অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। ডিডস আক্রমণ, বড় আইএসপি সিন্ডিকেট বা বাজার নিয়ন্ত্রণের যেকোনও প্রচেষ্টা রোধে মন্ত্রণালয়ের নজরদারি অব্যাহত থাকবে। খুব শিগগিরই দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবে বলে কর্তৃপক্ষ আশাবাদী।

ছোট আইএসপিদের জন্য সুসংবাদ
নতুন টেলিকম লাইসেন্স নীতিমালায় বড় এক পরিবর্তন এসেছে, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের আইএসপি এখন নিজেদের অপারেটিং এলাকা ছাড়াও পুরো জেলায় কার্যক্রম চালাতে পারবে। সরকার লাইসেন্স ফি আরও যুক্তিসংগত (প্রয়োজনে কিছুটা কমিয়ে) করার উদ্যোগ নিচ্ছে। ক্ষুদ্র ও আঞ্চলিক আইএসপিদের এসএমই খাতের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, অর্থাৎ তাদের স্বার্থরক্ষা সরকারে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

মূল্যনীতি ও লাইসেন্সিং বিষয়ে অবস্থান
সম্প্রতি এফটিএসপি মূল্যনীতি ও নেটওয়ার্ক লাইসেন্সিং নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশিত হলেও মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এফটিএসপি মূল্যনীতি নিয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্যের আগে বিটিআরসি থেকে এএনএসপি নির্দেশিকা পাওয়ার পর স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

সরকারের প্রতিশ্রুতি
ছোট আইএসপিদের বাজার থেকে সরিয়ে দেয়ার যে কোনও অপচেষ্টা রুখে দেয়া হবে। ডিডস আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। একটি ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক ইন্টারনেট ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা হবে। ইন্টারনেট কোনও বিলাসিতা নয়, এটি নাগরিক অধিকার। প্রান্তিক পর্যায়ের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা টিকে থাকলেই দেশের ডিজিটাল ইকোনমি টেকসইভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে প্রত্যাশা করছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণাল

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *