আজকের শিশু-কিশোররাই আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ চালাবে: প্রধানমন্ত্রী
ক.বি.ডেস্ক: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেল এর ৬০তম জন্মদিন আজ। ২০২১ সাল থেকে শেখ রাসেলের জন্মদিনকে ‘‘শেখ রাসেল দিবস’’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। এবার দিবসটি পালনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’।
১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবনে শেখ রাসেল জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে বাবা-মা ও পরিবারের অন্যান্য স্বজনের সঙ্গে তাকেও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে নরপিশাচরা। তিনি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। সেদিন বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় এই নৃশংসতা থেকে প্রাণে রক্ষা পান।
আজ বুধবার (১৮ অক্টোবর) তৃতীয়বারের মতো জাতীয়ভাবে নানা আয়োজনে একযোগে সারা দেশে ও বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোয় পালিত হচ্ছে ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২৩’। আইসিটি অধিদপ্তর ও শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের যৌথ উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয়ভাবে শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ক্রীড়া, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু-কিশোর, শিল্পকলা ও সংস্কৃতি, খুদে প্রোগ্রামার, খুদে উদ্ভাবক, খুদে লেখক, ডিজিটাল স্কুল, ডিজিটাল এক্সিলেন্স মোট ১০টি ক্ষেত্রে ১১জন শিশু-কিশোরকে শেখ রাসেল পদক প্রদান করা হয়।
পদক হিসেবে দেওয়া হয় এক ভরি ওজনের স্বর্ণ। অনুষ্ঠানে স্মার্ট বাংলাদেশ পুরস্কার ২০২৩ প্রদান করা হয়। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সাধারণ এবং কারিগরি ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ে ১২টি পুরস্কার এবং জেলা পর্যায়ে দেওয়া হয় আরও ১২টি পুরস্কার। শেখ রাসেল অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতা ২০২৩ এ অংশগ্রহণকারী ১০ জন বিজয়ীকে পুরস্কার হিসেবে কোর আই-৭, ১১ জেনেরেশনের ল্যাপটপ প্রদান করা হয়।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২৩’ উদযাপন ও শেখ রাসেল পদক বিতরণ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ পুরস্কার ২০২৩ প্রদান করেন প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের প্রতিটি স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হবে। এসব প্রকল্পগুলোর চালুর মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আরও গতি আসবে। স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট সৈনিক হবে আজকের শিশুরা। আজ আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। আগামী দিনে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ করবো। আজকের শিশু-কিশোররাই আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ চালাবে। আমি সে ভাবে তোমাদের গড়ে তুলতে চাই। আজকের শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যৎ। ধন-সম্পদ, টাকা-পয়সা থাকে না। শিক্ষা থাকে। শিক্ষাটাই মূল সম্পদ। পর্দার অন্তরালে থেকে আমাদের ছেলেমেয়েরা দেশের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা সন্ত্রাস, মাদকমুক্ত দেশ গড়ে তুলতে কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ এর পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিলো। এগুলো জানতোই না শিশুরা। এখন সেগুলো জানতে পারছে। আমরা শান্তি চাই, দেশের উন্নতি চাই, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ না হতেই ইসরাইল, ফিলিস্তিনের যুদ্ধ শুরু হয়েছে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে যুদ্ধ বন্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধের আহবান জানাচ্ছি। যুদ্ধে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিশু ও নারীরা। যুদ্ধের ভয়াবহতা আমরা জানি। আমরা রিফিউজি হিসেবে ছিলাম। আমরা চাই আমাদের শিশুরা আরও উন্নত হবে। আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। আজ থেকে ১৪ বছর আগের বাংলাদেশ কেমন ছিল? ১৯৯৬ সালে সরকারে এসে ডিজিটাল সিস্টেমের ব্যবস্থা করেছি, ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করেছি। ২০০৯-এর পর থেকে আজ পর্যন্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলেছি।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলকের সভাপতিত্বে ও ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন রনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আইসিটি সচিব সামসুল আরেফিন, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, সাংগঠনিক সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন।
অনুষ্ঠানে ‘স্মরণের আবরণে শেখ রাসেল’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে রাসেলের স্মৃতি নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল (অব.) অশোক কুমার তারার ভিডিও বার্তা প্রদর্শন করা হয়।