আইসিটি খাতে তিন বছরের জন্য কর অব্যাহতির মেয়াদ বৃদ্ধির আহ্বান
ক.বি.ডেস্ক: সরকারের আইন প্রণেতাগণ, অর্থনিতীবিদ, শিক্ষাবিদ এবং আইসিটি খাতের নেতৃবৃন্দ সহ সকলেই আগামী তিন বছরের জন্য কর অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। এই কর অব্যাহতি বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি বন্ধ হয়ে গেলে এই খাতে লভ্যাংশের হার আশঙ্কাজনক ভাবে হ্রাস পাবে এবং আইটি/আইটিইএস প্রতিষ্ঠানসমুহের পুনঃবিনিয়োগ ক্ষমতাও কমে যাবে। ফলে এই শিল্পের উন্নতির গতি মন্থর হয়ে যাবে এবং রপ্তানিও হ্রাস পাবে।
গতকাল রবিবার (৫ মে) ঢাকার একটি স্থানীয় হোটেলে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভিসিপিয়াব) আয়োজিত “ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেট ফর স্মার্ট বাংলাদেশ” শীর্ষক এক পলিসি ডায়ালগ অনুষ্ঠানে আইসিটি খাতে তিন বছরের জন্য কর অব্যাহতির মেয়াদ বৃদ্ধির আহ্বান জানান বক্তারা।
‘ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেট ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’ পলিসি ডায়ালগ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন ভিসিপিয়াব’র প্রেসিডেন্ট এবং অনুষ্ঠানের সভাপতি শামীম আহসান। বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য ও ভিসিপিয়াব’র উপদেষ্টা জারা জাবীন মাহবুব এবং সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ।
উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর কাছে আইসিটি খাতের কর অব্যাহতির বিষয় তুলে ধরবো। আমাদের আইটি/আইটিইএস খাতে কর অব্যাহতি প্রত্যাহার না করে বরং অতিরিক্ত প্রণোদনা দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।”
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “আইসিটি শিল্প উদ্যোক্তাদের কর অব্যাহতির যুক্তিসংগত দাবিকে সমর্থন করি। তাই, আগামী কয়েক বছরের জন্য আইসিটি খাতে বর্তমান কর অব্যাহতি বজায় রাখার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টাকে সবিনয় অনুরোধ করছি।”
সাংসদ কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, “আইসিটির মতো ক্রমবর্ধমান শিল্পের জন্য কর সুবিধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্মার্ট বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে, আমাদের অবশ্যই জ্ঞান-ভিত্তিক ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যান্য দেশের সঙ্গে ব্যবধান কমানোর জন্য নির্দিষ্ট কিছু পর্যায়ে দ্রুত গতিতে নিজেদের এগিয়ে নেয়া অপরিহার্য; অন্যথায়, আমাদের ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকিতে থাকতে হবে।”
শামীম আহসান বলেন, “আমাদের দাবিকৃত তিন বছরের কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষে, ১% থেকে ২% এর মধ্যে একটি বার্ষিক কর হার প্রবর্তন করা যেতে পারে। বাংলাদেশের জিডিপিতে আইসিটি খাতের অবদান ১.০৯%। বিপরীতে, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের অবদান ৭.৪০%, ফিলিপাইনের ৩.৪০%, ইন্দোনেশিয়ার ৪.২৩%, এস্টোনিয়ার ৭.০০%। ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারের ক্রমবিকাশ প্রাত্যহিক জীবনে ডিজিটাল প্রযুক্তি আরও বেশি করে যুক্ত হওয়ার প্রতিফলন স্বরূপ, যা সরকার এবং সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। ডিজিটাল পাবলিক ইন্টেলিজেন্স দ্বারা পরিচালিত শক্তিশালী ‘ডাটা ও ডিজিটাল ক্যাপিটাল’ গড়ে তুলে আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বের ‘এআই ইউজ কেস’ রাজধানীতে রূপান্তরের লক্ষ্য স্থির করতে পারি।”
পলিসি ডায়ালগ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইউজিসি’র সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী, ডিসিসিআই’র সভাপতি আশরাফ আহমেদ, সিসিসিআই’র সভাপতি ওমর হাজ্জাজ, সিএসই চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, বেসিস’র সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ;
ইকোনমিক রিসার্চ গ্রুপের (ইআরজি) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. এম. রোকনুজ্জামান, এডিএন টেলিকমের চেয়ারম্যান আসিফ মাহমুদ, স্পেকট্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়ামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফোরকান বিন কাসেম, কনস্টেলেশন অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা তানভীর আলী, স্মার্ট টেকনোলজিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, ব্রেন স্টেশন ২৩-এর সিইও রাইসুল কবির এবং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) পলিসি অ্যাডভাইজার ইমরান আহমেদ।