‘অনলাইন পরীক্ষা: সক্ষমতা ও গ্রহণযোগ্যতা’ শীর্ষক সেমিনার
ক.বি.ডেস্ক: বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার (১৫ জুন) অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয় ‘অনলাইন পরীক্ষা: সক্ষমতা ও গ্রহণযোগ্যতা’ শীর্ষক সেমিনার।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, যেহেতু এ মহামারির সময়ে আমাদের হাতে আর কোনো বিকল্প নেই তাই অনলাইন পরীক্ষার সক্ষমতা এবং গ্রহনযোগ্যতা বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। তা ছাড়া ইউজিসি অনলাইন পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে ঠিকই কিন্তু তারা কোনো সুনির্দিষ্ট অনলাইন এসেসমেন্টের গাইডলাইন দেয়নি। যার কারণে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্নভাবে ছাত্রছাত্রীদের এসেসমেন্ট করছে। ফলে ছাত্রছাত্রীদের এসেসমেন্টের কোয়ালিটিও ভিন্ন হচ্ছে। ইউজিসি যেহেতু কোনো নির্দিষ্ট গাইডলাইন দেয়নি; সেহেতু বিশেষজ্ঞদের মতামত, ছাত্রছাত্রীদের মতামত এবং শিক্ষকদের মতামত একটি কোর্ডিনেট ওয়েতে নিয়ে যদি অনলাইনে পরীক্ষা হয়, তাহলে সেটা আরো কিভাবে গ্রহণযোগ্য এবং ইফেক্টিভ করা যায় সেটা নিয়ে আমাদের কাজ করা উচিত।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান বলেন, আমাদের দেশেই অনলাইনে ক্লাস ও মূল্যায়ন নির্ধারণে প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে দেশীয় সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো সক্ষম। আমরা বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবশ্যই অনুপ্রেরণা নিতে পারি কিন্তু সেই সঙ্গে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট মাথায় রাখা প্রয়োজন। দেশীয় সক্ষমতার দিকে তাকানো প্রয়োজন। একাডেমিয়া এবং ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে একটা সম্পর্ক স্থাপনের মধ্য দিয়ে সবার প্রস্তাবিত সমাধানগুলো ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হয়। এডেক্স, গুগল ক্লাসরুমের মতো ফ্রি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে কিন্তু স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পর্যায়ের পরীক্ষায় দেশীয় সফটওয়্যার কোম্পানির তৈরিকৃত সলিউশনও পর্যাপ্ত রয়েছে এবং তা ব্যবহৃত হচ্ছে। সকল পর্যায়ে তিনি স্থানীয় সফটওয়্যার কোম্পানির তৈরিকৃত সলিউশন ব্যবহারের অনুরোধ জানান।
সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. সাফায়েত হোসেন, নোবিপ্রবির আইআইটির সহকারী অধ্যাপক অহিদুর রহমান সুমন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক কে এম ইমতিয়াজ উদ্দীন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক আন্নাজিয়াত আলীম রাসেল, নোবিপ্রবির আইআইটির প্রভাষক মো. ইফতেখারুল আলম ইফাত বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সৃজনশীল পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করার ব্যাপারে গুরুত্ব দেন। পাশাপাশি প্রশ্নব্যাংক তৈরি করে প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য আলাদা আলাদা প্রশ্নপত্র তৈরি করা, ইন্টারনেটে পর্যাপ্ত প্রশ্ন না দেওয়া, টেকনিক্যাল বিষয়গুলোতে মাল্টিপল সেটের কুইজ নেয়া যেতে পারে বলে মতামত দেন। মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর বিষয়টি সম্পর্কে আদৌ ধারণা আছে কি না তা যাচাই করা যেতে পারে বলে বক্তারা মনে করেন।
সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের যুগ্ম কোর্ডিনেটর (কমিউনিকেশন্স) মুন মন্ডল রাজীব। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা যুক্ত থেকে অনলাইন পরীক্ষা নিয়ে তাদের মতামত ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।