সাম্প্রতিক সংবাদ

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দিতে পারে সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ক.বি.ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বাংলাদেশ যেন বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে পারে সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব পুরো পৃথিবীর উতপাদন, বিপণন এবং উন্নয়ন সকল ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে। আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারে এর বিরাট ভূমিকা থাকবে। এ সকল বিষয় মাথায় রেখে আমাদের সরকার চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল শুক্রবার (৪ নভেম্বর) ‘‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে যাত্রা এবং ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন’’ শীর্ষক সম্মেলন উপলক্ষ্যে আজ এক বাণীতে এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির উদ্যোগে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আাগামীকাল শুক্রবার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মহান স্বাধীনতার পর বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কর্মমুখী শিক্ষা চালুর উদ্যোগসহ দেশে আইসিটির শক্তিশালী ভিত রচনায় নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেন। বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালে আইটিইউ’র সদস্যপদ লাভ করে। জাতির পিতা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণার জন্য বিসিএসআইআর ও বেতবুনিয়ায় স্যাটেলাইটের আর্থ স্টেশন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দেখানো পথেই আইসিটির সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করি। ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশে হাই-টেক পার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেই। আমরা ‘দিন বদলের সনদ-রূপকল্প-২০২১’ অঙ্গীকার অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই একটি আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে সক্ষম হই। তারুণ্যের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগানোর জন্য সারাদেশে ৯২টি হাই-টেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ও আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে। 

শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়নের পর আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে জ্ঞানভিত্তিক সমৃদ্ধিশালী ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা এমনভাবে প্রণয়ন করা হচ্ছে, যাতে তা ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০’ এবং ‘রূপকল্প ২০৪১’-এ উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সহায়ক হয়। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের বাস্তবতাকে বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থীদের কর্মমুখী ও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমাদের সরকার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও  প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’ স্থাপন করেছে। পর্যায়ক্রমে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে নেতৃত্বদানে সক্ষম করে তোলা এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করার জন্য মাদারীপুরের শিবচরে ‘শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি’ নামে বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়েছে। ৬৪ জেলায় স্থাপন করা হচ্ছে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইওটি, রোবোটিক্স, সাইবার সিকিউরিটিসহ উচ্চ-প্রযুক্তির ৩৩টি বিশেষায়িত ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। আগামীতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেন্টার ফর ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভুলিউশন এবং গবেষণা ও উদ্ভাবন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যেখানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, বিগ ডেটা অ্যানালাইটিক্স, ব্লকচেইন, রোবোটিক্সসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি বিষয়ে গবেষণা ও উদ্ভাবন হবে। এই সম্মেলনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষক, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী এবং ছাত্ররা তাঁদের চিন্ত-ভাবনা এবং উদ্ভাবনী বিষয় নিয়ে মতবিনিময়ের সুযোগ পাবে যা আমাদের ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ এবং ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পথ দেখাবে।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *