অন্যান্য মতামত

‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন’ শীর্ষক কর্মশালা

ক.বি.ডেস্ক: বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন’’ বিষয়ক কর্মশালা গতকাল বুধবার (১২ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মেট্রোনেট বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আলমাস কবীর। সমাপনী বক্তব্য রাখেন ডব্লিউটিও অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান।  

সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, আইসিটি বিভাগসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া এফবিসিসিআই, বিজেএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, লেদারগুডস অ্যাসোসিয়েশন ও ট্যানারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা  অংশগ্রহণ করেন।

সভায় তপন কান্তি ঘোষ বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও অটোমেশনের মতো নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে শিল্প ও প্রযুক্তির অভূতপূর্ব পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, মানুষের কাজ দখল করে নেবে উন্নত মানের মেশিন ও রোবট, ফলে অনেক লোক তাদের কর্মসংস্থান হারাবে। পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিও হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য এই কর্মশালার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রভাবে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে ৬০ শতাংশ, আসবাবপত্র শিল্পে ৫৫ শতাংশ, প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য শিল্পে ৪০ শতাংশ, চামড়া ও জুতা শিল্পে ৩৫ শতাংশ এবং সেবা শিল্পে ২০ শতাংশ লোক কর্মহীন হয়ে পড়বে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তথ্যপ্রযুক্তি ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিরাই টিকে থাকবে। আমাদের দেশে কারিগরি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ জনবল মাত্র ১৪ শতাংশ; কিন্তু উন্নত বিশ্বের দিকে তাকালে দেখা যায়, কারিগরিভাবে দক্ষ জনগোষ্ঠী প্রায় ৬০ শতাংশ। তাই আমাদের এখন থেকেই একটি সুপরিকল্পনার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে এবং একই সঙ্গে বাংলাদেশে কারিগরি দিক থেকে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে হবে।

তিনি তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ, প্রযুক্তিগত সমস্যায় উতপাদনে ব্যাঘাত সৃষ্টি, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করা, ইন্টারনেট ও অন্যান্য প্রযুক্তির মধ্যে অব্যাহত সংযোগ নিশ্চিত করা, অটোমেশনের কারণে বহু মানুষের কাজের সুযোগ হ্রাস পাওয়াকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেন। অটোমেশনের প্রভাবে কর্মক্ষেত্রে ঝুঁকি হ্রাস, উতপাদন শিল্পে নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য ও চিকিতসা খাতে বড় পরিবর্তন, বিশেষায়িত পেশার চাহিদা বৃদ্ধি ও সামগ্রিক জীবনযাত্রার মানোন্নয়নকে এই সম্ভাবনা হিসেবে চিহ্নিত করেন। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অনেক অগ্রগতি করছে। বর্তমান বিশ্বের আধুনিক সব তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নিতে বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছে। আগামী দিনের প্রযুক্তির সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে আমাদের প্রস্তুতি হিসেবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সংশ্লিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের জন্য উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *