উদ্যোগ সাম্প্রতিক সংবাদ

ডিজিটাল পদ্ধতিতে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থা

ক.বি.ডেস্ক: দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে গতিশীল করতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে উন্নততর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। গুগল ম্যাপ এবং আর্থ’র মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট স্থানের বন্যা সতর্কতার ভিত্তিতে প্লাবনের দৃশ্যপট নিয়মিত হালনাগাদ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রান্তিক জনসাধারণের কাছে সঠিক সময়ে সঠিকভাবে পৌঁছাতে এসএমএস পদ্ধতিতে পূর্বাভাস প্রেরণের বিষয়টি মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের সঙ্গে চলমান রয়েছে। মোবাইল এসএমএস’র মাধ্যমে সাধারণ জনগণের কাছে তথ্য প্রেরণ সম্ভব হবে।

গতকাল আজ রবিবার (২৫ অক্টোবর) পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে রাজধানীর পান্থপথে অবস্থিত পানি ভবনে ‘‘ডিজিটাল পদ্ধতিতে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থা’’ এর উদ্বোধন করা হয়। এর  উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. মোহসীন এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব মো. ফিরোজ সালাহ্ উদ্দিন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহমুদুল হাসান। বক্তব্য প্রদান করেন এটুআই’র পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী, গুগল’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়ুসি মাতিয়াছ, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ফজলুর রশিদ।

জাহিদ ফারুক বলেন, এ কার্যক্রমের আওতায় বাপাউবো’র বিদ্যমান ৫-দিনের আগাম বন্যা পূর্বাভাস উপাত্তকে প্রক্রিয়াকরণ করে উন্নততর প্লাবন মানচিত্রের সাহায্যে বন্যা শুরু হওয়ার তিন দিন থেকে তিন ঘণ্টা সময় পূর্বে স্থানীয় জনগোষ্ঠী পর্যায়ে তাতক্ষণিকভিত্তিতে ইন্টারনেট প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে। সম্প্রতি তিস্তার পানি বেড়ে গেলে ডিজিটাল ব্যবস্থায় তিন হাজার স্থানীয় মানুষকে পূর্বাভাস মেসেজ দিয়েছি।

জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক বলেন, পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ বাংলাদেশের তিন শতাধিক নদী অববাহিকার ৭১ শতাংশ প্লাবন ভূমি রয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট বন্যার পূর্বাভাস দিতে পারলে প্রাণ এবং সম্পদের নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব। বন্যার উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বাংলাদেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থার মাধ্যমে বন্যা ও দুর্যোগ প্রশমন এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো সম্ভব হবে।

এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, বাংলাদেশ আজ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বেড়েছে ও স্থায়ী প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। প্রযু্ক্তিগতভাবে আমরা এমন উচ্চতায় পৌঁছে গেছি যার ফলে আজকে নির্দিষ্ট জায়গার নির্ধারিত সময়ে আবহাওয়া কেমন থাকবে তার সঠিক পূর্বাভাস দেয়া সম্ভব হচ্ছে। আজকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থার প্রণয়নের মাধ্যমে সেটা আরও অত্যাধুনিক হলো।

কবির বিন আনোয়ার বলেন, মাত্র তিনদিন আগে আমাদের তিস্তা ব্যারেজের ওই পাড়ে হঠাত বৃষ্টিপাতের কারণে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে মারাত্মক বন্যার সৃষ্টি হয়। হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। আমরা আগেই গুগলের আগাম বার্তা পেয়েছিলাম এবং ৯ ঘণ্টায় তিস্তা ব্যারেজের তীরবর্তী ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে সরিয়ে ফেলতে পেরেছিলাম। উন্নততর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থা সঠিক সময়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দিয়ে বাংলাদেশকে বর্তমান একবিংশ শতাব্দিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার রোল মডেল হিসেবে তুলে ধরা সম্ভব হবে। সারাদেশের জন্য সমন্বিত ডিজিটাল পূর্বাভাস ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণের বিষয়েও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে এতে সহায়তা করছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো), এটুআই, গুগল, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *