উদ্যোগ মতামত সাম্প্রতিক সংবাদ

ডিজিটাল নিরাপত্তা দিতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দক্ষতা বাড়াতে হবে: মোস্তাফা জব্বার

ক.বি.ডেস্ক: ডিজিটাল বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত আধুনিক ডিভাইস এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল অপরাধের সংখ্যাও বাড়ছে। আইন শৃ্ঙ্খলা বাহিনী অনুযায়ী ডিজিটাল নিরাপত্তা প্রদানকারী সদস্যের সংখ্যা অপ্রতুল। নিরাপদ ইন্টারনেট থেকে শুরু করে ডিজিটাল নিরাপত্তায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দক্ষতা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি (বিসিএস) আয়োজিত গত বুধবার (০৭ এপ্রিল) ‘‘নিরাপদ ইন্টারনেট’’ শীর্ষক ওয়্যেবিনারে এসব কথা বলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, আমরা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়াতে পারলেও প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে জাতিকে পুরোপুরি সচেতন করে তুলতে পারিনি। শিক্ষার্থীদের আগে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করতে দেয়া হতো না। করোনাকালে ডিজিটাল ডিভাইস ছাড়া শিক্ষার্থীরা শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারছে না। আমাদের সমস্যা হলো, আমাদের সন্তানরা ডিজিটাল ডিভাইসের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলতে পারলেও অভিভাবকরা এখনো প্রযুক্তি বান্ধব নন। তাই অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা গেলে আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারবো। নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, আইসিটি বিভাগের পাশাপাশি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কেও উদ্যোগ নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেটের ইতিবাচক ব্যবহার সম্পর্কে উতসাহ দিতে হবে।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার বলেন, আইএসপিএবির উচিত ইন্টারনেট সংযোগ প্রদানের ক্ষেত্রে যেসব বাসায় শিশু বা শিক্ষার্থী রয়েছে সেসব বাসায় বিনা মূল্যে অভিভাবক সচেতনতা প্রদান করা। এতে শিশুদের ইন্টারনেটে অনেকাংশে নিরাপদ রাখা সম্ভব হবে। গ্রামাঞ্চলের দিকে অভিভাবকদের মধ্যে ডিজিটাল ডিভাইস এবং ইন্টারনেট সম্পর্কে জ্ঞান নেই বললেই চলে। অনেকাংশে শিক্ষকদের মধ্যেও ডিজিটাল জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা দেখা যায়। টেলিকম প্রতিষ্ঠানদের এ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ করতে সাইবার আদালতের সংখ্যাও বাড়াতে হবে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন বলেন, ইউনিয়ন পর্যন্ত ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। যতো সেবা বাড়বে তত এই সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত লোকের সংখ্যা বাড়বে। তাই ইন্টারনেট সচেতনতা এখন ‍গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর দেশৗয় বিকল্প তৈরির ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। ফেসবুক ফিল্টারিং ব্যাপারেও ভবিষ্যতে আমরা কাজ করবো।

বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, নিরাপদ ইন্টারনেটের অন্যতম শর্ত হলো ইন্টারনেট ব্যবহারের সচেতনতা। শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটে নিজের ভাষায় পর্যাপ্ত কনটেন্ট পাচ্ছে না। যার কারণে ইতিবাচক বিষয়ের চেয়ে নেতিবাচক বিষয়ের প্রতি শিক্ষার্থীরা ঝুঁকে পরছে। শিশুদের জন্য উপযুক্ত কনটেন্ট তৈরির পাশাপাশি যুব সমাজকে সময়ানুবর্তিতার ব্যাপারেও সচেতন করতে হবে। আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সেফ ইন্টারনেট কার্যক্রম সফল করা সম্ভব বলেই আমার বিশ্বাস।

বিসিএস মহাসচিব মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সঞ্চালনা করেন ইনোভিশন কনসাল্টিং প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রুবায়েত সরওয়ার। অনুষ্ঠানে বিটিআরসি পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ, ফাইবার এট হোমের প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ সুমন, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহযোগী অধ্যাপক ড. হেলাল উদ্দিন আহমেদ, ৭১ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবুসহ জিপি, রবি, বাংলালিংক এবং টেলিটকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। 

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *