সাম্প্রতিক সংবাদ

বাংলাদেশ আইসিটি অনলাইন সেমিনার, জাপান

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের সহযোগিতায় জাপানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এবং ফুজিৎসু গবেষণা ইনস্টিটিউট আয়োজন করে ওয়েবিনারে ‘বাংলাদেশ আইসিটি অনলাইন সেমিনার, জাপান’।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। আলোচক হিসেবে অংশগ্রহন করেন বাংলাদেশ দূতাবাস টোকিওর ড. শাহিদা আক্তার, আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন,বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর, জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি ফারহানা এ রহমান, পরিচালক রাশাদ কবির, বেসিসের সাবেক সভাপতি মাহবুব জামান, জেট্রো বাংলাদেশের প্রতিনিধি ইউজি আন্দো, জাইকা দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের উপ-পরিচালক সাইকো ইয়ামাবে, জিসা আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির কো-চেয়ারম্যান মাসাউকি ওসুকা, জাপান বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মহাসচিব তারেক রফি ভূঁইয়া (জুন), ফুজিৎসু রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পলিসি সাপোর্ট গ্রুপ মো. মাইদুল ইসলাম, মন্ত্রী ও এইচওসি জাপানের বাংলাদেশ টোকিও দূতাবাস ড. জিয়াউল আবেদীন,বাংলাদেশ দূতাবাস, টোকিওর কমার্শিয়াল কাউন্সিলর ড. আরিফুল হক। সেই সঙ্গে জাপানের ১৫০টি বিখ্যাত আইটি কোম্পানি এবং বাংলাদেশ থেকে জাপান ডেস্কের ৮০টি সদস্য কোম্পানি ওয়েবিনারে যোগদান করেন।

অনুষ্ঠানে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের অধীনে দেশের সকল জেলায় হাই-টেক পার্ক অথবা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবং আইসিটি খাতের প্রকৃত উন্নয়নে আইসিটি মন্ত্রণালয় এবং বেসিস জাপানের আইটি মার্কেট অন্বেষণ এবং বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগের সুবিধার্থে গত কয়েক বছর ধরে কাজ করছে। আইসিটি মন্ত্রণালয় জাপানের বাজারে বাংলাদেশী আইটি কোম্পানিগুলোর অবস্থান ও আস্থা তৈরিতে গত কয়েক বছর ধরে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

হোসনে আরা বেগম বলেন, বাংলাদেশে ২৮টি হাইটেক পার্ক প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে সরকার। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির লক্ষ্য হলো ২০২৫ সাল নাগাদ চতুর্থ বিপ্লব নামের এই নতুন ডিজিটাল বিপ্লব থেকে বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার আয় করা। তাদের লক্ষ হলো দেশি ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদেরকে সর্বোচ্চ সুবিধা প্রদান করা। সেই লক্ষে তারা দক্ষ জনশক্তি তৈরির ব্যাপারেও দ্রুততার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।

ড. মো. জাফর উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ৪০০ -এর বেশি কোম্পানি বিশ্বজুড়ে ৬০টির বেশি দেশে আইটি ও সফটওয়্যার রপ্তানীর সঙ্গে জড়িত। কোভিড-১৯ এর কারণে ই-কমার্স ব্যবসার অনেক নতুন দ্বার উন্মোচন হয়েছে, যা আমাদের জন্য খুবই ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।

সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, বেসিস জাপান ডেস্ক বেসিস সদস্যদের জাপানে ব্যবসা সম্প্রসারণে এবং জাপানি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশ অফশোর ডেভেলপমেন্ট সেন্টার স্থাপনে উৎসাহিত করবে। সফটওয়্যার একটি অদৃশ্য পণ্য হলেও সবসময় এমনকি করোনা মহামারির এই সময়েও এর প্রয়োজনীয়তা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামীতে আইসিটিখাত দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাত হিসেবে পরিচিতি পাবে এবং এ খাতে বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশে ৫০০০ এর বেশি গার্মেন্টস রয়েছে যাদের অবিলম্বে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট দরকার পড়তে পারে। সুতরাং জাপানীজ রোবট ম্যানুফেকচারিং কোম্পানীদের জন্য এটি একটি  ভালো সুযোগ হতে পারে বাংলাদেশে হাইটেক পার্কগুলোতে ম্যানুফেকচারিং ও এসেম্বলি সেন্টার তৈরী ও বিনিয়োগ করার।

ফারহানা এ রহমান বলেন,বেসিস জাপান ডেস্ককে সফল করতে হলে জাপানীজ কোম্পানীদের সহযোগীতা আমাদের একান্ত কাম্য। জাপান বাজারে কাজ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশী আইটি কোম্পানিগুলো অনেকাংশে তৈরী, এখন শুধু তাদের প্রয়োজন সুপরিকল্পিত একটি প্লাটফর্ম। অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকার এবং বেসিস জাপান বাজারে কাজ করার জন্য সুদক্ষ জনশক্তি তৈরীর দিকে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ইউজি আন্দো বলেন, জাপানে বাজারে আমাদের ব্যবসা প্রসারের জাপানি ভাষা ভালোভাবে রপ্ত করা প্রয়োজন। এজন্য তরুণ উদ্যোক্তাদের জাপনি ভাষা শেখার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) সহযোগিতায় বিজেট প্রোগ্রামের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন জাপানে তরুণ ইঞ্জিনিয়ারদের অনেক চাহিদা রয়েছে যেটা বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারে।

মাসাউকি ওসুকা বলেন কোভিড ১৯ অনেক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে বিশেষ করে আইটি ও সফটওয়্যার খাতে। তিনিও জাপানিজ ভাষা শিক্ষার উপর গুরুত্ব আরোপ করে আইটি ই ই পরীক্ষার কথা উল্লেখ করেন যেটার মাধ্যমে জাপানী ভাষা শিক্ষা রোপিত করার পাশাপাশি জাপানেই বাজারে কাজ করা সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে বাংলাদেশের তরুণ ইঞ্জিনিয়ারদের।

মাহবুব জামান বলেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ ডিজিটাল ডিভাইস ম্যানুফেকচারিং এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে একটি ভালো অবস্থানে পৌঁছে গিয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশ আগামীতে জাপানের সঙ্গে আইসিটি পার্টনার হিসেবে সফলভাবে কাজ করতে পারবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বেসিস জাপান ডেস্কের পাশাপাশি জাপানের টোকিওতেও একটি বাংলাদেশ ডেস্ক খোলার ব্যাপারেও অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তিনি বেসিসের প্রতি আহ্বান জানান।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *